Mahua Moitra's expulsion case

মহুয়া মৈত্র মামলা: সুপ্রিম কোর্টের এক্তিয়ারই নেই ব্যাখ্যা চাওয়ার, বলে দিল লোকসভার সচিবালয়

লোকসভার সচিবালয় জবাব দিতে গিয়ে সরাসরি অনুচ্ছেদ ১২২-এর উল্লেখ করে আইনসভার কার্যপদ্ধতি পর্যালোচনার ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের এক্তিয়ার নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০২৪ ১৮:২২
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

প্রশ্নঘুষকাণ্ডে মহুয়া মৈত্রের সাংসদ পদ খারিজের মামলায় এ বার সুপ্রিম কোর্টের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলল লোকসভার সচিবালয়। গত ৩ জানুয়ারি লোকসভার সচিবালয়কে নোটিস দিয়ে দু’সপ্তাহের মধ্যে ওই বিষয়ে জবাবদিহি করার নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। সেই সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার দেড় মাসেরও বেশি পরে বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চকে লোকসভার সচিবালয় জানিয়ে দিল সংসদের, সংবিধানের ১২২ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আইনসভার অভ্যন্তরীণ কার্যপদ্ধতিতে বিচারবিভাগ হস্তক্ষেপ করতে পারে না।

Advertisement

ঘুষ নিয়ে লোকসভায় প্রশ্ন করার অভিযোগে লোকসভা থেকে মহুয়ার সাংসদ পদ খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। লোকসভার এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কৃষ্ণনগরের বরখাস্ত তৃণমূল সাংসদ। সেই মামলায় দুই বিচারপতির বেঞ্চে মহুয়ার আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি অভিযোগ করেছিলেন, এথিক্স কমিটি একতরফা ভাবে রিপোর্ট তৈরি করেছিল। মহুয়ার বক্তব্য শোনা হয়নি। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই জবাবদিহি চেয়ে লোকসভার সচিবালয়কে নোটিস দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।

কিন্তু লোকসভার সচিবালয় জবাবে সরাসরি অনুচ্ছেদ ১২২-এর উল্লেখ করে আইনসভার কার্যপদ্ধতি পর্যালোচনার ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের এক্তিয়ার নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে। অভিযোগ করেছে, ভারতীয় সংবিধানে আইনসভা এবং বিচারবিভাগের ক্ষমতা এবং এক্তিয়ারের যে সুস্পষ্ট বিভাজন রয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ তার পরিপন্থী। জবাবি চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘‘সংসদের কার্যপদ্ধতি (এবং সিদ্ধান্ত) সংক্রান্ত পদ্ধতির কোনও অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করা যাবে না। হাউস (এ ক্ষেত্রে লোকসভা) নিজেই এর বৈধতার একমাত্র বিচারক।’’ তবে আইনজীবীদের একাংশ বলছেন, ২০০৭ সালে সাংসদ রাজারাম পাল বনাম লোকসভার স্পিকারের মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা হয়েছিল, সংসদে যে কোনও কার্যধারার বৈধতা সম্পর্কে শুধুমাত্র পদ্ধতিগত অনিয়মের ভিত্তিতে জবাব চাওয়া যেতে পারে।

Advertisement

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন এই ঘটনার ‘বৃহত্তর তাৎপর্য’ রয়েছে। তাঁদের মতে, এ ক্ষেত্রে নরেন্দ্র মোদী সরকার নতুন করে শীর্ষ আদালতের সঙ্গে সংঘাতের পথে হাঁটার ‘বার্তা’ দিয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে দিল্লিতে আমলাদের বদলি সংক্রান্ত অর্ডিন্যান্সের মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করে বিল পাশ করিয়েছে কেন্দ্র। একই ভাবে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটি থেকে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে ছেঁটে ফেলতে বিল পাশ করানো হয়েছে সংসদের দুই কক্ষে। এই আবহে মহুয়া-মামলা সেই দ্বন্দ্বের বৃহত্তর প্রেক্ষাপট খুলে দিল বলে মনে করছেন তাঁরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement