হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। ফাইল চিত্র।
ইউরোপ সফরে গিয়ে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন পূর্ব লাদাখ অঞ্চলে চিনের সঙ্গে সংঘাতের প্রসঙ্গটি তুললেন বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। জানালেন, গোটা বিষয়টি ‘পরিণত ভাবে ও দৃঢতার’ সঙ্গেই যুঝছে ভারত।
আমেরিকার সুরে সুর মিলিয়ে চিন প্রসঙ্গে ভারত সরাসরি তোপ দাগছে না কৌশলগত ভাবে। এর আগে টোকিয়োয় কোয়াড এবং সাম্প্রতিক নয়াদিল্লিতে টু প্লাস টু বৈঠক— দু’ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে আমেরিকার কর্তারা যে ভাবে নাম করে চিনের বিরোধিতা করেছেন, তা থেকে বিরত থেকেছে নয়াদিল্লি। আর চার দিন পরেই আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। তার পরে সে দেশের চিন-নীতি কী হবে, তা অনিশ্চিত। চিনের সঙ্গে আলোচনার মাঝখানে এখনই আগ বাড়িয়ে আমেরিকার চিন-বিরোধী ক্লাবের সদস্য হতে সচেতন ভাবেই চাইছে না নয়াদিল্লি।
কিন্তু ফ্রান্সের মতো কৌশলগত মিত্রদেশে গিয়ে সুকৌশলে চিন নিয়ে বার্তা দিতে কসুর করছে না সাউথ ব্লক। প্যারিসে একটি অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তৃতায় বিদেশসচিব শ্রিংলা বলেছেন, “কয়েক দশকের মধ্যে চিনের সঙ্গে সীমান্তে সব চেয়ে ভয়ঙ্কর সঙ্কটের মোকাবিলা করেছে ভারত। তা করা হয়েছে দৃঢতার সঙ্গে এবং পরিণত ভাবেই।” ভারত এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নয়াদিল্লি এবং প্যারিসকে শক্তিশালী অংশীদার হিসেবে তুলে ধরে শ্রিংলা বলেন, বিতর্কের শান্তিপূর্ণ সমাধান চায় ভারত। রাষ্ট্রের ভৌগোলিক অখণ্ডতা এবং সার্বভৌমত্ব বজায় রাখার প্রশ্নেও ভারত সরকার অটল।
কূটনৈতিক সূত্রের মতে, ফ্রান্সের মাটিতে দাঁড়িয়ে সংযমের সঙ্গে চিন নিয়ে বার্তা দেওয়ার তাৎপর্য রয়েছে। ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তা, নৌ-চলাচল এবং বাণিজ্য নিয়ে আগ্রহ রয়েছে ফ্রান্সের। এই অঞ্চলে ফ্রান্সের একাধিক দ্বীপ রয়েছে। রাশিয়ার মতোই আমেরিকার নেতৃত্বাধীন ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় উদ্যোগে তারা জোটবদ্ধ হতে চায় না। তাই চিনের বাণিজ্যিক ও কৌশলগত একাধিপত্যের মোকাবিলা করতে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি করছে ফ্রান্স।