—ফাইল চিত্র।
আদালতে গড়িয়েছে জমি বিতর্ক। তার মধ্যেই সম্প্রীতির ছবি কাশীতে। কোনও রকম আইনি জটিলতায় না গিয়ে সুবিধা অনুযায়ী নিজেদের মধ্যে জমি অদল বদল করে নিলেন কাশীর বিশ্বমাথ মন্দির এবং জ্ঞানব্যাপী মসজিদ কর্তৃপক্ষ। কাশী বিশ্বনাথ ধাম করিডর গড়ার জন্য মসজিদ লাগোয়া ১ হাজার ৭০০ বর্গফুটের একটি জমি নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে আলাপ আলোচনা চলছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। শ্রাবণ মাসের আগে ওই জমিটি মন্দির কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিয়েছেন মসজিদ কর্তৃপক্ষ। তার পরিবর্তে মসজিদ কর্তৃপক্ষের হাতে অন্যত্র ১ হাজার বর্গফুটের একটি জমি তুলে দিয়েছে শ্রী কাশী বিশ্বনাথ মন্দির ট্রাস্ট। আয়তনে হেরফের থাকলেও, দু’টি জমির বাজারমূল্য একই বলে জানিয়েছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ।
লিজের মাধ্যমে জমি দু’টি অদল বদল হয়েছে। গত ৯ জুলাই দু’পক্ষের মধ্যে সেই মতো চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। উত্তরপ্রদেশ সরকারের তরফে শ্রী কাশী বিশ্বনাথ মন্দির ট্রাস্টের অধিকর্তা সুনীলকুমার বর্মা এবং আনজুমান ইন্তেজামিয়া মসজিদের আবদুল বতিন নোমানি তাতে স্বাক্ষর করেন। শুক্রবার বারাণসীতে আনুষ্ঠানিক ভাবে এই জমি অদল বদলের কথা ঘোষণা করা হয়। বারাণসীর ডিভিশনাল কমিশনার দীপক আগরওয়াল জানিয়েছেন, মসজিদ কর্তৃপক্ষের জমিটি ওয়াকফ বোর্ডের মালিকানাধীন ছিল। কাশী ধামের উন্নয়নে সেটি মন্দির কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। মূল রাস্তার ধারে তাদের একটি জমি দিয়েছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। দু’বছর ধরে আলাপ আলোচনার পর এই জমির অদল বদল সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইন্তেজামিয়া মসজিদের এসএম ইয়াসিন।
তবে কাশী ধাম উন্নয়নের কথা মাথায় রেখে জমি অদল বদল করে নিলেও, জ্ঞানবাপী মসজিদ চত্বর সমীক্ষার মামলা এখনও আদালতে ঝুলে রয়েছে। কাশী বিশ্বনাথ মন্দির চত্বরের মধ্যেই জ্ঞানবাপী মসজিদ নিয়ে মামলা দায়ের হয়েছে আদালতে। জ্ঞানবাপী মসজিদ যে জমিতে গড়ে উঠেছে, সেটি আদতে হিন্দুদের বলে তাতে অভিযোগ করা হয়েছে। হিন্দুদের ওই জমি ফিরিয়ে দিতে আদালতের হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়েছে। মামলাকারী আইনজীবীর দাবি, ১৬৬৪ সালে মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেব দু’হাজার বছরের পুরনো কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের একাংশ ধ্বংস করে সেখানে মসজিদ গড়ে তোলেন। তার পাল্টা মসজিদ কর্তৃপক্ষেও আদালতে যায়।
তার জেরে বারাণসীর স্থানীয় আদালত ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (আর্কিয়োলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া)-কে কাশী বিশ্বনাথ মন্দির এবং জ্ঞানবাপী মসজিদ চত্বরে প্রত্নতাত্ত্বিক সমীক্ষা করার অনুমতি দেয়। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দু’জনকে নিয়ে পাঁচ সদস্যে একটি কমিটি গড়তে বলা হয়।