জহর সরকারকে রাজ্যসভা প্রার্থী হিসেবে বেছে নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
দিল্লি সফরে যাওয়ার আগে দলের রাজ্যসভা প্রার্থী ঠিক করে ফেললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রসার ভারতীর প্রাক্তন অধিকর্তা জহর সরকারকে তৃণমূলের প্রার্থী মনোনীত করলেন তিনি। শনিবার দলের টুইটার হ্যান্ডলে সে কথা ঘোষণা করা হয়। জন পরিষেবায় ৪২ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন জহরকে রাজ্যসভায় প্রার্থী করা হচ্ছে বলে জানায় তারা।
২০২০ সালের ৩ এপ্রিল রাজ্যসভায় তৃণমূলের সাংসদ নির্বাচিত হন দীনেশ ত্রিবেদী। ২০২৬ সালের ২ এপ্রিল পর্যন্ত মেয়াদ ছিল তাঁর। কিন্তু গত ১২ ফেব্রুয়ারি পদত্যাগ করেন। বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল থেকেও বেরিয়ে আসেন দীনেশ। যোগ দেন বিজেপি-তে। সেই জায়গাতেই এ বার জহরকে পাঠানোর তোড়জোড় শুরু করে দিল তৃণমূল। আগামী ৯ অগস্ট ওই আসনে উপনির্বাচন এবং ফল ঘোষণা।
শনিবার তৃণমূলের ঘোষণার পরই আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে জহরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বলেন, ‘‘অনেক দিন পর শনিবার সকালে উনি (মমতা) ফোন করেন আমাকে। জানান, রাজ্যসভার জন্য দলের তরফে আমাকে ভাবা হচ্ছে। জানতে চান, আমি এই প্রস্তাবে রাজি কি না। একটু ভেবে বলি, কোনও আপত্তি নেই। তার পরই দলের তরফে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হয়।’’ মাঝে অনেক দিন মমতার সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না তাঁর। তাই এত দিন পর ফোন করে সরাসরি রাজ্যসভায় প্রার্থী করার প্রস্তাব দেওয়ায়, এখনও ঘোর কাটছে না বলে জানিয়েছেন জহর।
অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসার জহরের সঙ্গে তৃণমূল নেতৃত্বের সম্পর্ক আগাগোড়াই ভাল। আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে মমতা সরকারের টানাপড়েনের সময়, আলাপনেরই পক্ষ নিয়েছিলেন তিনি। আলাপনকে দিল্লিতে তলব করায় মোদী-শাহ পাগল হয়ে গিয়েছেন বলে টুইটারে মুখ খুলেছিলেন। সেই সময় তিনি লিখেছিলেন, ‘মোদী-শাহ কি পাগল হয়ে গিয়েছেন? পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবসর নিতে আর একদিন বাকি৷ এখন তাঁকে দিল্লিতে বদলি করা হচ্ছে? মুখ্যমন্ত্রী চেয়েছিলেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় আরও তিন মাস পদে থাকুন। ঘূর্ণিঝড়ের ত্রাণ বণ্টন এবং করোনার পরিস্থিতি সামাল দেওয়ায় ব্যাঘাত ঘটাতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অন্তর্ঘাত এটা৷ বাংলার মানুষ বিজেপি-র বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার বদলা।’
জহরের নাম সামনে আসার পর রাজ্যের তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ টুইটারে লেখেন, ‘রাজ্যসভায় যাচ্ছেন জহর সরকার। একজন কৃতী ছাত্র, দেশের সর্বোচ্চ মহলে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করা অন্যতম সেরা ও অভিজ্ঞ আমলা, একজন রুচিশীল, অসাধারণ জ্ঞানী, সুপটু লেখক ও বাগ্মীকে মনোনয়ন দিল তৃণমূল।’ এমনিতে নেটমাধ্যমে মোদী-বিরোধী বলে পরিচিত জহর। তাই রাজ্যসভায় তাঁর প্রবেশ নিয়ে কুণালের বক্তব্য, ‘দিল্লিতে স্পষ্ট হচ্ছে আগামী বিকল্পের পদধ্বনি।’