১৪ বছর আগের খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত গ্রেফতার গুজরাতে। —প্রতীকী চিত্র।
সমকামী সঙ্গীকে খুনের দায়ে ১৪ বছর পরে গ্রেফতার করা হল যুবককে। গুজরাতের আমদাবাদে ২০১০ সালে তিনি সঙ্গীকে খুন করেছিলেন বলে অভিযোগ। খুনের পর দেহ পুঁতে দিয়েছিলেন রান্নাঘরের মেঝেতে। পরে অন্য রাজ্যে পালিয়ে যান। পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে ১৪ বছর কাটিয়ে দিয়েছিলেন অভিযুক্ত। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। আমদাবাদ থেকে তাঁকে গ্রেফতার করেছে গুজরাত পুলিশের অপরাধদমন শাখা।
ধৃতের নাম রমেশ দেসাই। তিনি আমদাবাদের ভেজালপুরের বাসিন্দা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনি মণীশ গুপ্তা নামের এক যুবকের সঙ্গে সমকামী সম্পর্কে ছিলেন। একসঙ্গেই থাকতেন তাঁরা। কোনও বিষয়কে কেন্দ্র করে তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হলে রাগের মাথায় মণীশকে খুন করেন রমেশ। তাঁর মাথায় পাথর দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। সঙ্গীর মৃত্যু হলে রমেশ তাঁর হাত-পা বেঁধে বাড়ির রান্নাঘরের মেঝেতে পুঁতে দেন। গ্রেফতারি এড়াতে তার পর গুজরাত ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। আশ্রয় নিয়েছিলেন রাজস্থানে। পরিচয় লুকোতে তিনি ভুয়ো আধার কার্ডও বানিয়েছিলেন বলে অভিযোগ।
১৪ বছর আগের এই খুনের ঘটনা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ধামাচাপা পড়ে গিয়েছিল। সম্প্রতি আমদাবাদ পুলিশ পুরনো অমীমাংসিত মামলাগুলিকে নতুন করে ঘেঁটে দেখা শুরু করে। তাদের কাছে খবর আসে, ওই হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত মুম্বই থেকে আমদাবাদ হয়ে রাজস্থানের দিকে যাচ্ছেন। পথেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশকে তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁর নাম রাজনারায়ণ গুর্জর। তিনি রাজস্থানের বাসিন্দা। ভুয়ো আধার কার্ডেও সে কথা লেখা ছিল। কিন্তু তদন্তকারীরা জানান, তাঁর কথায় রাজস্থান নয়, গুজরাতের বাসিন্দাদের টান রয়েছে। চাপে পড়ে এর পরেই ধৃত স্বীকার করে নেন তিনি রমেশ, ২০১০ সালের সেই হত্যাকাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত।
পুলিশকে রমেশ আরও জানান, মণীশের সঙ্গে একত্রে থাকাকালীন এক দিন তাঁকে হেনস্থা করা হয়েছিল। সেই ক্ষোভেই মণীশকে পাথর দিয়ে আঘাত করেছিলেন তিনি। কিন্তু সঙ্গী যে সেই আঘাতে মারা যাবে, এ কথা তিনি ভাবতে পারেননি। খুনের পর কোনও রকমে দেহটি মেঝেতে পুঁতে দেন। তার পর রাজস্থানে পালিয়ে যান। সেখানেই পরিচয় লুকিয়ে কাটিয়ে দেন দীর্ঘ আট বছর। ২০১৮ সালে রাজস্থান থেকে মহারাষ্ট্রের মুম্বইতে চলে যান রমেশ। ২০২১ সালে বিয়ে করেন। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে খুন সম্পর্কে আরও তথ্য জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।