ভোল বদলাবে গাঁধীর সাবরমতি আশ্রম। ফাইল চিত্র।
মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর সাবরমতী আশ্রমের খোলনলচে বদলে সায় দিল গুজরাত হাই কোর্ট। এ বিষয়ে গুজরাতের বিজেপি সরকারের উদ্যোগের বিরোধিতা করে গাঁধীজির প্রপৌত্র তুষার গাঁধী যে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন, আদালত শুক্রবার তা খারিজ করে দিয়েছে। এর ফলে সাবরমতী আশ্রম চত্বর থেকে শতাধিক দলিত পরিবারের বাধার মুখে আর পড়তে হবে না সরকারকে।
মোদীর উদ্যোগে সাবরমতী চত্বরকে ‘বিশ্বমানের পর্যটন কেন্দ্র’ হিসেবে গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে ওই আশ্রমের জমিতে বসবাসকারী হরিজনদের উচ্ছেদের প্রকল্প নিয়েছে কেন্দ্র। ১৯১৭ সালে মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর তৈরি ওই আশ্রমে পাঁচ প্রজন্ম ধরে বসবাসকারী দলিত (হরিজন) পরিবারগুলিকে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়ার জন্য গত বছর গুজরাত সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর ‘স্বপ্নের প্রকল্প’ গড়ে তোলার জন্য উন্নয়ন করা হবে ওই চত্বরের।
সাবরমতী আশ্রম ও লাগোয়া পাঁচ একর জমিতে ওই ‘উন্নয়ন প্রকল্পের’ জন্য খরচ হবে আনুমানিক ১,৩০০ কোটি টাকা। কিন্তু গাঁধীর বংশধর তুষার কেন্দ্র ও গুজরাত সরকারের ওই কর্মসূচির বিরোধিতা করেন। তাঁর অভিযোগ, সরকার যে পদক্ষেপ করছে, তা গাঁধীর মতাদর্শ এবং জীবনধারার পরিপন্থী। যদিও সেই আবেদন খারিজ করে গুজরাত হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি অরবিন্দ কুমারের বেঞ্চ সেই যুক্তি খারিজ করে বলেছে, ‘প্রস্তাবিত প্রকল্পটি শুধু মহাত্মা গাঁধীর চিন্তাধারা ও দর্শনকে সমুন্নত রাখবে না, সমাজ ও মানবজাতির পক্ষে কল্যাণকর এবং শিক্ষণীয় হবে।’
শুধু শতাধিক দলিত পরিবারের বসতি নয়, সাবরমতী আশ্রমের বিস্তৃত অংশে রয়েছে পাঁচটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দফতরও। গাঁধীর আদর্শের অনুপ্রেরণায় নানা গঠনমূলক কর্মসূচি চালায় ওই সংস্থাগুলি। পাঁচটি সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত একটি উপদেষ্টা কমিটির মাথায় রয়েছেন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী। মোদীর ‘স্বপ্ন’ বাস্তবায়িত করতে ওই সংস্থাগুলিকেও তাদের ঠিকানা থেকে উচ্ছেদ করা হতে পারে বলে গুজরাত সরকারের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির তরফেও ইতিমধ্যেই সাবরমতীর ‘উন্নয়ন’ পরিকল্পনার বিরোধিতা করা হয়েছে। তবে গুজরাত সরকার জানিয়েছে, প্রতিটি পরিবার এবং সংস্থার পুনর্বাসনের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করা হবে।