গুজরাতে নৌকা দুর্ঘটনায় মৃত ফারুকের কন্যা (বাঁ দিকে) এবং তাঁর ভাইয়ের পুত্র (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
বিয়ের ১৭ বছর পর ঘর আলো করে এসেছিল এক কন্যাসন্তান। ফারুকের পরিবারে সেই সন্তানকে নিয়ে উচ্ছ্বাসের অন্ত ছিল না। বিয়ের পর সন্তান না হওয়ায় যে বিষণ্ণতার ছায়া ছিল, ১৭ বছর পর সন্তান হওয়ায় এক নিমেষেই তা উধাও হয়ে গিয়েছিল ফারুকের জীবন থেকে। সন্তানের জন্য মসজিদে মসজিদে কত না প্রার্থনা করেছিলেন ফারুক এবং তাঁর স্ত্রী রহিমা। যাকে পাওয়ার জন্য এত প্রার্থনা, এত ‘সাধ্যসাধনা’, সেই সন্তানকেই ফারুক-রহিমার জীবন থেকে কেড়ে নিল সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এক দুর্ঘটনা।
গুজরাতের বাসিন্দা ফারুক এবং রহিমা। কন্যাসন্তানকে তাঁরা ভর্তি করিয়েছিলেন বরোদার একটি নামী স্কুলে। সেই স্কুল থেকেই গত ১৮ জানুয়ারি পড়ুয়াদের পিকনিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বরোদার হারনি এলাকায়। যেখানে পিকনিক করা হচ্ছিল, তার পাশেই রয়েছে একটি হ্রদ। সেখানে বোটিংয়ের ব্যবস্থাও রয়েছে। পড়ুয়াদের বিনোদনের জন্য নৌকাবিহারের ব্যবস্থা করেছিলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। একটি নৌকায় শিক্ষক-সহ ২৭ জন পড়ুয়াকে ওঠানো হয়েছিল। কারও পরনে লাইফজ্যাকেট ছিল না। নৌকাটি ঘাট থেকে কিছু দূর এগোতেই বেসামাল হয়ে পড়ে। তার পর সেটি উল্টে যায়। ১২ জন পড়ুয়া নিখোঁজ হয়ে যায়। বাকিদের উদ্ধার করা হয়।
যে ১২ পড়ুয়ার মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে ছিল ফারুক-রহিমার কন্যা এবং ফারুকের তুতো ভাইয়ের পুত্র। ফারুক যখন খবরটি পেয়েছিলেন তিনি তখন লন্ডনে। সন্তানের মৃত্যুর খবর পেয়ে বাক্রুদ্ধ হয়ে পড়েন। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ছ’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কী ভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।