গুজরাতের মোরবীতে সেতু ভেঙে ১৪১ জনের মৃত্যুর পরেও সংস্থার কর্তারা এখনও অধরা। উঠছে প্রশ্ন। — ফাইল ছবি।
এখনও ধরা পড়েনি ওরেভা সংস্থার শীর্ষকর্তারা। এর মধ্যেই মোরবীর ঝুলন্ত সেতুর সংস্কারের দায়িত্বে থাকা সংস্থার দফতরে বৃহস্পতিবার হানা দিল পুলিশ। দফতরের দরজা বন্ধ থাকায় ফিরে আসতে হয় তাদের। গুজরাতের মোরবীতে ওই সেতু ভেঙে মারা গিয়েছেন অন্তত ১৪১ জন।
কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমের দাবি, ওরেভা সংস্থার দফতরে ‘তল্লাশি অভিযান’ চালিয়েছে পুলিশ। যদিও পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, ইতিমধ্যে ধৃত সংস্থার নয় কর্মীকে জেরা করে কিছু তথ্য মিলেছে। সেই তথ্য খতিয়ে দেখতেই সংস্থার দফতরে গিয়েছিল পুলিশ।
মূলত ‘অজন্তা’ ঘড়ি তৈরি করে নাম করেছে ওরেভা সংস্থা। মোরবীতে সেতু ভেঙে এত জনের মৃত্যুর পরেও সংস্থার কর্তারা এখনও অধরা। ২৬ অক্টোবর সেতু উদ্বোধনের পর সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর জয়সুখভাই পটেল দাবি করেছিলেন, ‘আট থেকে ১০ বছর’ এর উপর দিয়ে চলাচল করতে পারবে মানুষ। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। ৩০ অক্টোবরই মাচ্ছু নদীর উপর সেতু ভেঙে প্রাণ গিয়েছে শতাধিক মানুষের। এখনও নিখোঁজ বহু। কিন্তু এখনও অধরা ওরেভা সংস্থার কর্তারা।
তার পরেই বিরোধী কংগ্রেস, বাম, আপ থেকে মৃতের আত্মীয়রা প্রশ্ন তুলেছে, কেন এখনও ওরেভা সংস্থার কর্তাদের গ্রেফতার করা হয়নি? মোরবী পুরসভার সঙ্গে সেতু সংস্কারের চুক্তি সই করেছিলেন জয়সুখভাই। সেই পুরকর্তাদের গ্রেফতারির দাবিও উঠেছে। চুক্তি অনুযায়ী, সংস্কারের জন্য আট থেকে ১০ মাস ঝুলন্ত সেতুটি বন্ধ রাখার কথা ছিল। কিন্তু সাত মাসের মাথাতেই সেই সেতু খুলে দেওয়া হয়। চার দিনের মাথাতেই ভেঙে পড়ে সেই সেতু।
আদালতে পুলিশ এ-ও জানিয়েছে, ব্রিটিশ আমলে তৈরি ওই সেতু সংস্কারের যোগ্যতা ছিল না ওরেভা সংস্থার। তার পরেও ২০০৭ এবং ২০২২ সালে তাদের সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। ওরেভা আবার সেতু সংস্কারের দায়িত্ব অন্য একটি ছোট সংস্থাকে দিয়েছিল।
আদালতে সরকারি আইনজীবী আরও জানিয়েছেন, সেতুটির মেঝে সংস্কার করা হলেও তা ধরে রাখার জন্য যে তার ছিল, সেগুলি পাল্টানো হয়নি। ফলে চার স্তরের নতুন অ্যালুমিনিয়াম পাতগুলিকে ধরে রাখতে পারেনি পুরনো তারগুলি। তাতেই বিপত্তি। ওরেভা সংস্থার এক কর্মী আবার ধরা পড়ার পর আদালতে এই দুর্ঘটনাকে ‘ঈশ্বরের ইচ্ছা’ বলেন। সেই নিয়ে বিতর্কও হয়েছে ঢের। ৩০ অক্টোবর সন্ধ্যাবেলা সেতুটিতে টিকিট কেটে উঠেছিলেন প্রায় ৫০০ জন মানুষ। ভার রাখতে না পেরে সেটি ভেঙে পড়ে যায়। মারা গিয়েছেন প্রায় ১৪১ জন।