গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইসার বা এনএসএ) পদে টানা তৃতীয় বার অজিত ডোভালকে পুনর্বহাল করল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার। বৃহস্পতিবার সরকারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ৭৭ বছরের ডোভালের পুনর্নিয়োগের কথা জানানো হয়েছে। গত ১০ জুন থেকেই কার্যকর হয়েছে ওই নির্দেশিকা।
২০১৪-য় প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরই প্রাক্তন গোয়েন্দাকর্তা ডোভালকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদে নিয়ে এসেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। তার পর একে একে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে জঙ্গিদমনে তাঁর নেতৃত্বেই পদক্ষেপ করে সরকার। ২০১৬ সালে উরিতে জঙ্গি হানার পর তাঁর নেতৃত্বেই পাক অধিকৃত কাশ্মীরে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হয়েছিল। সেই সময় যা মোদী সরকারের পক্ষে প্রবল জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছিল।
এর পর ২০১৭ সালে ডোকলামে ভারত-চিন যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সেই সময় মূলত ডোভালের হস্তক্ষেপেই পরিস্থিতি শান্ত হয় এবং দু’দেশের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি হয়। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে পুলওয়ামায় সিআরপিএফ কনভয়ে জঙ্গিহানার পরে পাকিস্তানের বালাকোটে জঙ্গিশিবিরে বিমানহানার নেপথ্যেও ডোভালের মস্তিষ্ক ছিল বলে সরকারের একটি সূত্রের খবর।
পাঁচ বছর দক্ষতার সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার দায়িত্ব সামলানোর ‘পুরস্কার’ হিসাবে ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের পরে পুনর্নিয়োগ পেয়েছিলেন অবসরপ্রাপ্ত ওই আইপিএস আফিসার। শুধু আরও পাঁচ বছর স্বপদে পুনর্বহালই নয়, তাঁর পদমর্যাদাও বাড়িয়ে দিয়েছিল দ্বিতীয় মোদী সরকার। মোদীর প্রথম বারের প্রধানমন্ত্রিত্বের পাঁচ বছরে ডোভালের পদমর্যাদা ছিল কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর সমান। সেই পদমর্যাদা বাড়িয়ে তাঁকে দেওয়া হয়েছিল পূর্ণমন্ত্রীর মর্যাদা।
দ্বিতীয় দফার মেয়াদে ডোভালের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল ৩৭০ ধারা রদের পর অশান্ত হয়ে ওঠা কাশ্মীর উপত্যকায় আইনশৃঙ্খলা ফেরানোর ক্ষেত্রে। পাশাপাশি, ২০২০-র জুনে পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকার চিনা ফৌজের সঙ্গে ভারতীয় সেনা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পরে দফায় দফায় বেজিংয়ের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে উত্তেজনা প্রশমনেও তাঁর উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণ ছিল। যদিও সে সময়ই বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ডোভালের ‘দূরত্বের’ খবর নিয়েও জল্পনা তৈরি হয়েছিল। ফলে তৃতীয় দফায় মোদী প্রধানমন্ত্রী হলে তিনি পুনর্নিয়োগ পাবেন কি না, তা নিয়ে তৈরি হয়েছিল সংশয়। বৃহস্পতিবার সেই সংশয়ে ইতি টেনে দিলেন মোদী।