শক্তিকান্ত দাস। ফাইল চিত্র।
করোনার রাক্ষুসে হাঁ থেকে অর্থনীতিকে বাঁচাতে শুধু সুদ ছাঁটাই যে যথেষ্ট নয়, তা মানলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস। জানালেন, ওই জন্য সরকারি ত্রাণ প্রকল্পও জরুরি। দ্বিতীয় দফায় যা তৈরি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। সেই ত্রাণ জোগাতে গিয়ে এই অর্থবর্ষে রাজকোষ ঘাটতিকে লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে বেঁধে রাখা যে কার্যত অসম্ভব হবে, তা মেনে নিচ্ছেন তিনি। ইঙ্গিত, আপাতত তার জন্য উপেক্ষা করা যেতে পারে মূল্যায়ন সংস্থার চোখরাঙানি। এমনকি সরকারের আয়ের তুলনায় বেশি সেই বিপুল ব্যয়ের জোগান দিতে টাকা ছাপানোর সম্ভাবনাও একেবারে উড়িয়ে দেননি শক্তিকান্ত।
আজ সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর বলেন, “ত্রাণ প্রকল্প জরুরি। সেই প্যাকেজ তৈরি করছে কেন্দ্র। ইতিমধ্যে সরকারি ভাবে তা জানিয়েওছেন অর্থমন্ত্রী।” তবে ত্রাণ দিতে গিয়ে ঘাটতিকে লক্ষ্যমাত্রার (জিডিপি-র ৩.৫%) মধ্যে বেঁধে রাখা যে কঠিন হবে, তা-ও মেনেছেন তিনি। শক্তিকান্তের কথায়, ‘‘এক দিকে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সরকারের ব্যয় বিপুল বাড়বে। অন্য দিকে, আর্থিক কর্মকাণ্ড শ্লথ হওয়ায় জিএসটি-সহ সমস্ত ধরনের কর আদায় কমার সম্ভাবনা। ফলে আয়ে টান পড়বে সরকারের। তাই কার্যত অসম্ভব হবে রাজকোষ ঘাটতিকে লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে বেঁধে রাখা।’’
কিন্তু ব্যয়ের টাকা সরকার জোগাড় করবে কোথা থেকে?
আরও পড়ুন: বাড়ছে সংক্রমণ, তবু বাঁধ দেওয়া যাচ্ছে না ভিড়ে
আরও পড়ুন: প্রতিষেধক আবিষ্কার-যুদ্ধে শামিল বাঙালিনি
রাস্তা দু’টি— বাজার থেকে আরও বেশি ধার করা (বিশেষত দীর্ঘ মেয়াদি বন্ড ছেড়ে) আর নয়তো নোট ছাপানো। স্পষ্ট করে না-বললেও, দু’টির কোনও সম্ভাবনাকেই খারিজ করে দেননি শক্তিকান্ত। বলেছেন, ‘‘এমন কঠিন, অদ্ভুত সময়ে টাকা জোগাড়ের জন্য প্রথাগত এবং উদ্ভাবনী, উভয় রাস্তাই খোলা রাখা জরুরি।’’ এমনকি নোট ছাপানোর সম্ভাবনা প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, “রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অন্দরে এ নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়।… এ বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।… রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ব্যালান্স শিট এবং অবশ্যই দেশের অর্থনৈতিক ভারসাম্যকে নড়বড়ে না-করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” কিন্তু ঘাটতি মাত্রাছাড়া হলে কিংবা নোট ছাপানোর দরুন মূল্যবৃদ্ধি মাথা তুললে, ভারতের রেটিং (কোনও দেশের ঋণ ফেরত দেওয়ার সম্ভাবনা) ছাঁটাই করবে না মূল্যায়ন সংস্থাগুলি? তা দেখে কি তখন এ দেশে টাকা ঢালা থেকে পিছিয়ে যাবে না বহু বিদেশি সংস্থা? গভর্নরের দাবি, “রেটিং গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এখন আর শুধু তার ভিত্তিতে লগ্নির গন্তব্য ঠিক করে না বিদেশি সংস্থাগুলি।”
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)