পরিবারের সঙ্গে তিরথ শাহু। নিজস্ব চিত্র।
শ্যাম রাখি, না কুল রাখি… সংসার চালাতে গিয়ে এমনই অবস্থা হয়েছিল ছত্তীসগঢ়ের বাসিন্দা তিরথ শাহুর। এক দিকে সংসার চালানোর টাকা, অন্য দিকে সন্তানদের পড়াশোনা, তাদের আবদার মেটানো— রাজমিস্ত্রির কাজ করে উপার্জিত সামান্য টাকায় হিমশিম খাচ্ছিলেন তিনি। এখন সেই তিরথই কয়েক দিনে ২২ হাজার টাকা উপার্জন করে ফেলেছেন। সন্তান, স্ত্রীর শখ মেটাচ্ছেন, স্বাচ্ছন্দ্যে সংসার চালাচ্ছেন। শুধু তাই নয়, স্ত্রীকে উপহার হিসেবে সম্প্রতি সোনার মঙ্গলসূত্রও কিনে দিয়েছেন তিরথ।
‘নুন আনতে পান্তা ফুরনো’ তিরথের হঠাৎ এমন ‘ভাগ্যোদয়’ হল কী ভাবে? এর নেপথ্যে অবশ্যই রয়েছে ছত্তীসগঢ় সরকার পরিচালিত প্রকল্প গোধন ন্যায় যোজনা।
এ বছরের ২০ জুলাই এই প্রকল্পটি চালু করে ছত্তীসগঢ় সরকার। এর মূল লক্ষ্য, জৈব চাষকে উৎসাহ দেওয়া এবং মফস্সল ও গ্রামীণ এলাকায় কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। তাই সরকার গ্রামবাসী এবং গোবর কুড়োনিদের কাছ থেকে কেজি প্রতি ৮ টাকা করে গোবর কেনার সিদ্ধান্ত নেয়। গৌথানগুলো থেকে কেজি প্রতি ২ টাকা করে গোবর কেনা শুরু করে সরকার। সরকারি হিসেব বলছে, ২০ অক্টোবর থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত ৭৭ হাজার ৫৯২ জন গ্রামবাসীর কাছে থেকে ৮ কোটি ৯৭ লক্ষ টাকার গোবর কেনে সরকার। আর এর মাধ্যমে গ্রামবাসীদের অর্থ উপার্জনের একটা রাস্তাও খুলে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই ১ লক্ষ ৮৪ হাজার ৮৯৯ জন নিজেদের এই প্রকল্পের জন্য নথিভুক্ত করেছেন। তা ছাড়া ৮৮ হাজার ৮১০ জন গো-পালক এই প্রকল্পের সুবিধা উপভোগ করছেন বলে দাবি সরকারি সূত্রের।
তিরথের ‘ভাগ্যোদয়’-এর চাবিকাঠি এই গোধন যোজনা প্রকল্প-ই। তাঁর স্ত্রী একটা স্কুলে রান্নার কাজ করতেন। কোভিডের জেরে তা এখন বন্ধ। ফলে দু’জনের আয় থেকে এক জন বাদ পড়ে যাওয়ায় তিরথ আরও চাপে পড়ে যান। তখনই গোধন যোজনা তাঁর জীবনে আশীর্বাদ হয়ে আসে। তিরথ ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা গোবর সংগ্রহ করেন। সেগুলো বিক্রি করেন। ভাল উপার্জনও হচ্ছে। তিরথ বলেন, “আমার মতো ছাপোষা ছত্তীসগঢ়বাসীর জন্য গোধন ন্য়ায় যোজনা একটা আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। গোবর বেচে অর্থ উপার্জনের কথা আগে কেউ ভাবেনইনি। সেই গোবরই এখন আমার মতো আরও অনেকের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিয়েছে।”
আরও পড়ুন: সোমবার থেকে মহারাষ্ট্রে খুলে যাচ্ছে মন্দির-সহ সব ধর্মস্থান