গৌতম আদানি। ফাইল ছবি।
যাবতীয় আশঙ্কা আর সংশয়ের মধ্যে আদানি পোর্টস, এন্টারপ্রাইজ়েস-সহ গোষ্ঠীর চারটি সংস্থার শেয়ার দর শুক্রবার কিছুটা ঘুরে দাঁড়াল ঠিকই। তবে বাকিগুলির বিপর্যয় আটকানো গেল না সূচকের বিপুল উত্থান সত্ত্বেও। এ দিন সেনসেক্স ৯০৯.৬৪ পয়েন্ট উঠে পৌঁছে যায় ৬০,৮৪১.৮৮ অঙ্কে। নিফ্টি ২৪৩.৬৫ এগিয়ে হয় ১৭,৮৫৪.০৫। আর তার মধ্যে দাঁড়িয়েই আদানি ট্রান্সমিশন, আদানি গ্রিন এনার্জি, আদানি পাওয়ার, আদানি টোটাল গ্যাস, আদানি উইলমার, এনডিটিভি-র শেয়ারের দাম আরও মুখ থুবড়ে পড়তে থাকে।
আদানি এন্টারপ্রাইজ়েসের দর অবশ্য শেষে ১.২৫% বেড়েছে। তবে বিএসই-তে এক সময় তা ৩৫% পড়ে নেমেছিল ১০১৭.১০ টাকায়। যা এক বছরে সব থেকে কম। সকালের লেনদেনে অনেকগুলি পড়তে পড়তে পতনের ন্যূনতম সীমায় ঠেকে।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, আমেরিকার ডাও জোন্সের ‘সাসটেনেবিলিটি সূচক’ (আর্থিক, সামাজিক বা পরিবেশগত স্থিতিশীলতার বিচারে বিশ্বের সেরা সংস্থাগুলিকে নিয়ে তৈরি শেয়ার সূচক) থেকে আদানি এন্টারপ্রাইজ়েসকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ভারতে বাজার খোলার পরে অস্থির করে তোলে সংস্থাগুলিকে। এসঅ্যান্ডপি ডাও জোন্স সূচক বিবৃতিতে জানায়, আদানিদের সরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ওঠা আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহল এবং সংবাদমাধ্যমের বিশ্লেষণ খতিয়ে দেখেই। এ মাসের ৭ তারিখে সূচকটি খোলার আগে তা কার্যকর হবে। পরে ফ্রান্সের টোটাল এনার্জিস আদানি গোষ্ঠীর কিছু সংস্থায় তাদের লগ্নি ধরে রাখা নিয়ে জোরালো বার্তা দিলে বাজারের পরিস্থিতি বদলায়, দাবি একাংশের। তবে প্রমাদ গুনছেন গৌতম আদানির বিভিন্ন সংস্থায় লগ্নিকারীরা। গত ছ’দিনের লেনদেনে মোট ৮.৭৬ লক্ষ কোটি টাকার শেয়ার সম্পদ হারিয়েছেন যাঁরা।
বিশেষজ্ঞ আশিস নন্দী বলেন, বিশ্বের কিছু বাজারে চাঙ্গা ভাব, দেশে ব্যাঙ্ক শিল্পের শেয়ার দর বৃদ্ধি, সুদ বৃদ্ধির প্রক্রিয়া শেষ দফায় বলে আমেরিকার কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের ইঙ্গিত এ দিন বাজারকে ঠেলে তুলেছে। নিয়ন্ত্রক সেবির পদক্ষেপের ফলে আদানি গোষ্ঠীর কিছু সংস্থার শেয়ার দরও চড়ে। স্টেট ব্যাঙ্ক-সহ একাংশ সেখানে তাদের লগ্নি নিয়ে বিনিয়োগকারীদের দুশ্চিন্তা দূর করতে মাঠে নামে। এর সার্বিক ফল সূচকের উত্থান। আশা, বাজেট প্রস্তাবগুলির সুবাদে বাজার ক্রমশ চাঙ্গা হবে। তবে তাঁর সতর্কবার্তা, ‘‘পেনশন ফান্ড-সহ অনেকে ডাও জোন্সের স্থিতিশীলতা সূচকের ভিত্তিতে আদানিদের সংস্থার শেয়ার বা বন্ডে পুঁজি ঢেলেছিল। ডাও-এর সিদ্ধান্তে সেগুলি বিক্রির ঝোঁক বাড়তে পারে। এতে সংস্থাগুলির শেয়ার দর আরও পড়ার আশঙ্কা থাকছে।