বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’। ছবি: সংগৃহীত।
সর্বভারতীয় স্তরে বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ গঠনের পর এই প্রথম কোনও অঙ্গরাজ্যে জোটের ‘ফ্রেম’ তৈরি হতে চলেছে। তামিলনাড়ুর রাজধানী চেন্নাইয়ে শনিবার বিকালে একই মঞ্চে থাকবেন পাশাপাশি থাকবেন কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএম, এনসিপি-সহ জোটভুক্ত দলগুলির মহিলা নেত্রীরা। সৌজন্যে তামিলনাড়ুর শাসকদল ডিএমকে।
শনিবার ডিএমকে মহিলা অধিকার সংক্রান্ত একটি সম্মেলনের আয়োজন করেছে। তাতে যোগ দিতে ইতিমধ্যেই চেন্নাই পৌঁছেছেন কংগ্রেসের প্রাক্তন সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী, অন্যতম সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা। ডিএমকে-র তরফে বক্তাদের যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে রয়েছেন রাজ্যসভায় তৃণমূলের সদ্য প্রাক্তন সাংসদ সুস্মিতা দেব, সিপিএম পলিটব্যুরোর সদস্য সুহাসিনী আলি, এনসিপি নেত্রী তথা শরদ গোবিন্দরাও পওয়ারের কন্যা সুপ্রিয়া সুলে। পাশাপাশিই রয়েছেন জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি, শিবসেনা (ইউবিটি) নেত্রী প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদীও।
জাতীয় স্তরে বিজেপি বিরোধী জোট গড়লেও বিভিন্ন রাজ্যের বাস্তবতায় তা ফলিত স্তরে কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে ‘ইন্ডিয়া’র নেতৃত্বও সন্দিহান। তবে তামিলনাড়ুতে যে ‘ইন্ডিয়া’ সবচেয়ে কার্যকরী হতে পারে, তার রাজনৈতিক বাস্তবতা রয়েছে, তা প্রথমে লিখেছিল আনন্দবাজার অনলাইনই। শনিবার দেবীপক্ষের সূচনালগ্নে মহিলা অধিকার সম্মেলনের মধ্যে দিয়ে সেটাই ঘটতে চলেছে।
‘ইন্ডিয়া’র গত মুম্বই বৈঠকেই ঠিক হয়েছিল, রাজ্যে রাজ্যে তারা সমাবেশ-সভা করবে। প্রাথমিক ভাবে ভোটমুখী মধ্যপ্রদেশে তা করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কমলনাথদের আপত্তিতে তা ভেস্তে যায়। তার পর আর ঐক্যবদ্ধ জোটের ছবি দেখা যায়নি কোনও রাজ্যেই। শনিবার তা দেখতে চলেছে তামিলনাড়ু। রাজনৈতিক মহলের অনেকের মতে, তামিলনাড়ুর শাসকজোটে ডিএমকের সঙ্গে রয়েছে কংগ্রেস, সিপিএম, সিপিআই। তবে তৃণমূল, শিবসেনা বা এনসিপি সেখানে জোট শরিক নয়। তার পরেও সকলকে একমঞ্চে হাজির করাতে পারছেন এমকে স্ট্যালিন, কানিমোঝিরা।
সংসদের বিশেষ অধিবেশনে মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ করিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু তার বাস্তবায়ন যে এখনই হচ্ছে না, তা-ও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। বিরোধীদের বক্তব্য, লোকসভা ভোটের আগে মহিলাদের মন পেতে বিজেপির এ-ও এক নতুন ‘জুমলা’। আবার তৃণমূলের মহুয়া মৈত্রেরা প্রকাশ্যেই বলছেন, আইন ছাড়াই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর দলের ৪০ শতাংশ মহিলা সাংসদ করেছেন। এর জন্য আইন লাগে না। দরকার সঠিক মানসিকতা এবং রাজনৈতিক সদিচ্ছা। রাজনৈতিক মহলের অনেকের মতে, মহিলা অধিকার নিয়ে সম্মেলন আসলে মোড়ক। মূল বিষয় হল, জোটের মজবুত ছবি তুলে ধরা। যেখানে থাকছেন সকলে। থাকছে সব দল।