(বাঁ দিকে) বিপ্লব দেব, নীতি দেব। —ফাইল ছবি।
বছর ছয়েক আগে এক বার সমাজমাধ্যমে রটে গিয়েছিল, ত্রিপুরার তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের বিবাহবিচ্ছেদ হতে চলেছে। কিন্তু সেই সময়ে তাঁর স্ত্রী নীতি দেব বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিলেন, সবই আসলে ‘রটনা’। বিপ্লবকে রাজনৈতিক ভাবে ‘হেয়’ করতেই এই ধরনের ‘কুৎসা’ করা হচ্ছে।
বিপ্লব এখন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি, তিনি পশ্চিম ত্রিপুরার সাংসদও। সেই বিপ্লব সম্পর্কে এ বার প্রকাশ্যে বিবৃতি দিলেন স্ত্রী নীতিই। বুধবার সমাজমাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘‘দেবজি বিবাহবিচ্ছেদ চেয়েছেন।’’ সমাজমাধ্যমে দীর্ঘ পোস্ট করেছেন নীতি। যার ছত্রে ছত্রে রয়েছে ২৪ বছরের ‘সম্পর্ক ভাঙার যন্ত্রণা’র কথা। নীতি লিখেছেন, ‘‘আমার তরফে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি আমি। কিন্তু আর কিছুই করার নেই।’’
বিপ্লব-নীতির দুই সন্তান— এক পুত্র, এক কন্যা। এক জন প্রাপ্ত বয়স্ক, অন্য জন প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার দোরগোড়ায়। সন্তানদের কথা উল্লেখ করে নীতি লিখেছেন, ‘‘কোনও মা কখনওই এই ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে চায় না। যখন তার সন্তানদের (বাবা-মায়ের থেকে) সেরাটা পাওয়ার কথা।’’
এ নিয়ে বিপ্লবের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর আগরতলা এবং দিল্লির আপ্তসহায়কেরাও কোনও জবাব দেননি। তবে নীতির বিবৃতি নিয়ে বিজেপি তো বটেই, ত্রিপুরার রাজনীতিও আলোড়িত হতে শুরু করেছে।
বিপ্লব ত্রিপুরার ভূমিপুত্র হলেও তাঁর জীবনের একটা বড় সময় কেটেছে দিল্লিতে। রাজধানী শহরে জিম ট্রেনারের কাজও করতেন তিনি। সেখানেই নীতির সঙ্গে তাঁর পরিচয়। প্রণয়। পরে বিবাহ। সেই সময়েই বিজেপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার শুরু। পরে একাধিক বিজেপি সাংসদের আপ্তসহায়কের দায়িত্বও সামলেছেন। সেই বিপ্লবকেই ২০১৬ সালে ত্রিপুরা বিজেপির সভাপতি করে পাঠিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহেরা। ২০১৮ সালে তাঁর নেতৃত্বেই দীর্ঘ বাম সরকারের পতন ঘটায় বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী করা হয় তাঁকে। কিন্তু প্রথম পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ২০২২ সালে মুখ্যমন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন বিপ্লব। তার পর তাঁকে রাজ্যসভায় পাঠায় বিজেপি। ২০২৪ সালের লোকসভায় তাঁকে টিকিটও দিয়েছিল পদ্মশিবির। তিনি জিতে সাংসদও হয়েছেন।
সমাজমাধ্যমে পোস্ট করা নীতির সেই বিবৃতি।
বিপ্লব আপাতত দিল্লির ভোটের কাজে ব্যস্ত। ঠিক সেই সময়েই সমাজমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে বিবাহবিচ্ছেদের কথা জানালেন স্ত্রী নীতি। দীর্ঘ সেই পোস্টে হৃদয় ভেঙে যাওয়ার ‘ইমোজি’ ব্যবহারও করেছেন তিনি। কী কারণে এত বড় সিদ্ধান্ত? তা যদিও স্পষ্ট করেননি নীতি। তবে বিপ্লব সম্পর্কে লিখেছেন, ‘‘উনি প্রলোভনের ফাঁদে পড়ে গিয়েছেন।’’ বুধবার যে পোস্ট করেছেন নীতি, তার সঙ্গে একটি ভিডিয়োও রয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, নীতি শিবের পুজো করছেন।