নরেন্দ্র মোদীর ডিগ্রি নিয়ে প্রশ্ন তুললেন উদ্ধব ঠাকরে। ফাইল চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে এ বার প্রশ্ন তুললেন শিবসেনা (বালাসাহেব ঠাকরে) নেতা তথা মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। তবে সরাসরি মোদীর ডিগ্রি জাল বলে অভিযোগ তোলেননি তিনি। সোমবার ছত্রপতি শম্ভাজি নগরে এক সভায় উদ্ধব বলেন, ‘‘আমি জানি না ডিগ্রি দেখাতে ওঁর (মোদী) আপত্তি কেন!’’
সেই সঙ্গেই প্রয়াত বালাসাহেব ঠাকরের পুত্র বলেন, ‘‘(মোদীর) যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা তাদের তো ওঁর জন্য গর্ব অনুভব করার কথা। সংবর্ধনা দেওয়ার কথা। আমি এবং এনসিপি নেতা জয়ন্ত পাটিল একই সঙ্গে দাদরের বলরাম বিদ্যামন্দিরের ছাত্র ছিলাম। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ আমাকে সংবর্ধনা জানিয়েছিলেন। মোদী দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। জানি না, মোদীকে কেন তাঁর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তরফে সংবর্ধনা জানানো হয়নি!’’
প্রসঙ্গত, মোদীর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় চলতি সপ্তাহেই আম আদমি পার্টির প্রধান তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছে গুজরাত হাই কোর্ট। পাশাপাশি বিচারপতি বীরেন বৈষ্ণব জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর ডিগ্রির কপি প্রকাশ করতে বাধ্য নয় তাঁর দফতর এবং সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরীওয়াল দিল্লি এবং গুজরাত বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে প্রধানমন্ত্রীর ডিগ্রির প্রতিলিপি চেয়েও না-পেয়ে কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনের (সিআইসি) দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশন প্রধানমন্ত্রীর দফতর, গুজরাত বিশ্ববিদ্যালয় এবং দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে মোদীর স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পর্কে তথ্য তলব করে।
সেই নির্দেশের বিরোধিতা করে ওই সব তথ্য প্রকাশে আপত্তি জানিয়ে গুজরাত হাই কোর্টে আবেদন করে গুজরাত বিশ্ববিদ্যালয়। সেই মামলায় মোদীর পক্ষে রায় দিয়েছেন বিচারপতি বৈষ্ণব। প্রসঙ্গত, নির্বাচন কমিশনে মোদীর দেওয়া হলফনামা অনুযায়ী, তিনি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিরাগত ছাত্র হিসেবে ১৯৭৮-এ তৃতীয় ডিভিশিনে বিএ পাশ করেছিলেন। ১৯৮৩-তে গুজরাত থেকে প্রথম ডিভিশনে এমএ পাশ করেন। তথ্যের অধিকার আইনে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে মোদীর ডিগ্রির নথি প্রকাশের আর্জি জানানো হয়েছিল। মুখ্য তথ্য কমিশনার বিশ্ববিদ্যালয়কে তা প্রকাশের নির্দেশ দেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় তাতে আপত্তি তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়।
এ ক্ষেত্রে কেজরীবালের অভিযোগ ছিল, প্রধানমন্ত্রী প্রভাব খাটাচ্ছেন। মোদীর ডিগ্রি বিতর্ক ধামাচাপা দিতে ২০১৬ সালে আগে অরুণ জেটলি (বর্তমানে প্রয়াত) অমিত শাহ সাংবাদিক বৈঠক করে মোদীর ‘ডিগ্রি’ দেখিয়েছিলেন। কিন্তু তার পরেও আম আদমি পার্টি অভিযোগ তোলে, মোদীর মার্কশিট ও ডিগ্রির শংসাপত্রে দু’রকম নাম রয়েছে। মার্কশিট ১৯৭৭ সালের, ডিগ্রি ১৯৭৮-এর।