ফাইল চিত্র।
সেটা ২০১৯ সালের ডিসেম্বর। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে তুমুল আলোড়নের জেরে আচমকাই ভারত সফর বাতিল করে দিয়েছিলেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। তার পরে বিভিন্ন ওঠাপড়ার মধ্যে দিয়ে চলেছে ভারত এবং বাংলাদেশের সম্পর্ক। এ বার সে সব কাটিয়ে বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রীর ভারত সফরের তোড়জোড় শুরু হয়েছে বলে বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর।
সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি মাসের ২৩ থেকে ২৫ তারিখে ভারতে আসছেন বাংলাদেশের বিদেশসচিব মাসুদ বিন মোমেন। তাঁর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হবে বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলার। সেই বৈঠকে বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রীর সম্ভাব্য সফর নিয়ে প্রাথমিক কথা হবে।
দু’দেশের সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা বিদেশসচিব পর্যায়ের বৈঠকে। গত বছর মার্চে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঢাকা গিয়েছিলেন। তার পরেই কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্ত হয় উপমহাদেশ। এখন তুলনামূলক ভাবে ভাল পরিস্থিতিতে দু’দেশের মধ্যে হওয়া চুক্তিগুলির কত দূর অগ্রগতি হল, খতিয়ে দেখবেন দু’দেশের বিদেশসচিব। ঢাকা সূত্রের খবর, মায়ানমার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দ্রুত যাতে ফিরিয়ে নেয়, তা নিয়ে সে দেশকে বোঝাতে ভারতকে অনুরোধ করবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের বিদেশসচিবের ২৩ তারিখ ঢাকা থেকে সরাসরি পৌঁছনোর কথা চেন্নাইয়ে। সেখানে বাংলাদেশের নতুন ডেপুটি হাইকমিশনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে। ২৪ তারিখ নয়াদিল্লি আসছেন মাসুদ বিন মোমেন। শ্রিংলার সঙ্গে আলোচনার পাশাপাশি কথা হবে আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিয়েও।
সূত্রের মতে, বিদেশ মন্ত্রক বরাবরই বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতিতে তৎপর। কিন্তু সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রকের মধ্যে এ বিষয়ে তালমিলের অভাব দেখা গিয়েছে। বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশের প্রশ্নে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বিদেশমন্ত্রীর অবস্থানের পার্থক্য প্রকট হয়ে উঠতে দেখা গিয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্যের তখন বিরোধিতা করেছিলেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী। গত বছর করোনার টিকা ঢাকায় পাঠাতে না পারা নিয়ে ভারত-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কে কিছু অবিশ্বাস ও ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছিল।
তবে দু’দেশের ‘সোনালি অধ্যায়’ নিয়ে বিদেশ মন্ত্রক আশাবাদী। তিস্তা চুক্তির বাস্তবায়ন নিয়ে এখনই কোনও সমাধান হবে না ধরে নিয়েই সম্পর্কের অন্যান্য দিকগুলিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যই দ্বিপাক্ষিক ভাবে রাখা হয়েছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রীর আসন্ন সফর, সম্পর্ককে প্রয়োজনীয় গতি দেবে বলেই মনে করা হচ্ছে।