Bihar Flood Situation

বিহারে প্লাবন পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ১৬ লাখ, নদী বাঁধ ভেঙে জল প্রবেশ করছে গ্রামে, ঘরছাড়া প্রচুর

পূর্ব ও পশ্চিম চম্পারণ, গোপালগঞ্জ, আরারিয়া, সুপাউল, কাটিহার, পূর্ণিয়া-সহ একাধিক জেলায় নিচু এলাকাগুলি জলমগ্ন। এখনও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে একাধিক জেলায়। হড়পা বানেরও আশঙ্কা রয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:৪৪
Share:

বিহারের বন্যা পরিস্থিতিতে নিয়ে উদ্বেগ। ছবি: পিটিআই।

নেপালের বন্যায় মৃতের সংখ্যা ইতিমধ্যে ১৭০ ছাড়িয়েছে। নিখোঁজ অন্তত ৪২ জন। নেপালের বন্যার জেরে বিহারেও বিস্তীর্ণ এলাকায় প্লাবন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে ভারত-নেপাল সীমান্তবর্তী এলাকায় কোশী, গণ্ডক এবং বাগমতী নদীর ধারে বাঁধ ভেঙে জল প্রবেশ করেছে তীরবর্তী এলাকাগুলিতে। ঘরছাড়া হয়েছেন প্রচুর মানুষ। বিঘার পর বিঘা চাষের জমি জলের তলায়। সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ে উল্লেখ, রবিবার সিতামারিতে মধকুল গ্রামের কাছে বাগমারির নদীবাঁধ ভেঙে গিয়েছে। অন্য দিকে পশ্চিম চম্পারনের বাল্মিকী ব্যাঘ্র প্রকল্পের কাছে গণ্ডক নদীর বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। ব্যাঘ্র প্রকল্পের ভিতরে জল প্রবেশ করতে শুরু করেছে।

Advertisement

বিহারের জলসম্পদ দফতর জানিয়েছে, বাগমারি নদীতে অপ্রত্যাশিত জলের চাপের কারণে সীতামারি, শেওহর জেলায় নদীর উভয় তীরে বেশ কিছু জায়গায় বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যদিও সেগুলি সঙ্গে সঙ্গে মেরামতের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জলসম্পদ দফতর। নদী বাঁধে ফাটল ধরার ঘটনায় কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে বাগাহার বন্যা নিয়ন্ত্রণ শাখার নির্বাহী ইঞ্জিনিয়ার নিশিকান্ত কুমারকে নিলম্বিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। জলসম্পদ দফতর জানিয়েছে, বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ করা হচ্ছে।

ছোট ছোট নদীগুলিতে জলস্তর কিছুটা নামতে শুরু করেছে। তবে বিহারের বন্যা পরিস্থিতি এখনও বেশ উদ্বেগজনক। সরকারি সূত্রকে উদ্ধৃত করে পিটিআই উল্লেখ করেছে, প্লাবন পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বিহারের প্রায় ১৬ লাখ মানুষ। যদিও হতাহতের কোনও খবর এখনও নেই। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি কোশী নদীর উপর বীরপুর বাঁধ থেকে ৬ লাখ ৬১ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। গত ৫৬ বছরের ইতিহাসে এত জল এক বারে ছাড়া হয়নি এই বাঁধ থেকে। এর আগে ১৯৬৮ সালে ছাড়া হয়েছিল ৭ লাখ ৮৮ হাজার কিউসেক জল। একই ভাবে গণ্ডক নদীর উপর বাল্মিকীনগর বাঁধ থেকে ছাড়া হয়েছে ৫ লাখ ৬২ হাজার কিউসেক জল। যা ২০০৩ সালের পর থেকে সর্বাধিক। এই দুই বাঁধ থেকে অতিরিক্ত জল ছাড়ার কারণে পূর্ব ও পশ্চিম চম্পারণ, গোপালগঞ্জ, আরারিয়া, সুপাউল, কাটিহার, পূর্ণিয়া-সহ একাধিক জেলায় নীচু এলাকাগুলি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।

Advertisement

বিহারের জলসম্পদ মন্ত্রী বিজয়কুমার চৌধরী আশ্বস্ত করেছেন, নদী বাঁধের পরিস্থিতির উপর সর্বক্ষণ নজর রাখা হচ্ছে। সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। মন্ত্রী জানিয়েছেন, গত কয়েক দিনের বৃষ্টির কারণে গণ্ডক, কোশী, বাগমতি, বুড়ি গণ্ডক, কমলা বালান, মহানন্দা এবং গঙ্গার জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। সীমান্তবর্তী এলাকায় বেশ কিছু নদীর জলস্তর বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে।

উল্লেখ্য, আবহাওয়া দফতর থেকে জানানো হয়েছে এখনও বেশ কিছু জেলায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ভারী বৃষ্টি হতে পারে পূর্ব ও পশ্চিম চম্পারণ, সীতামারি, শেওহর, মুজফ্ফরপুর, গোপালগঞ্জ, সিওয়ান, সরণ, বৈশালী, পটনা, জেহানাবাদ, মধুবনী এবং ভোজপুর জেলায়। সে ক্ষেত্রে এই জেলাগুলিতে হড়পা বানের আশঙ্কাও রয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement