Farmers Protest

সংস্কার প্রয়োজন, কৃষকদের বার্তা দেওয়ার চেষ্টা প্রধানমন্ত্রীর

কৃষকদের অবস্থান বিক্ষোভে গত প্রায় ১২ দিন ধরে অবরুদ্ধ দেশের রাজধানী। কৃষক সংগঠন ও সরকারের মধ্যে দফায় দফায় বৈঠকেও সমাধান হয়নি। এই পরিস্থিতিতে আজ নাম না করে সংস্কারের পক্ষে সওয়াল করে সরব হন প্রধানমন্ত্রী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:২০
Share:

ছবি: পিটিআই।

বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আগামিকাল ভারত বন্‌ধের ডাক দিয়েছেন কৃষকেরা। সেই বন্‌ধের আগে আজ নাম না করে কৃষকদের বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করলেন প্রধানমন্ত্রী। আজ ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে আগরা মেট্রো প্রকল্পের উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘নতুন সুবিধা, নতুন ব্যবস্থার জন্য সংস্কার প্রয়োজনীয়। অতীতের আইন দিয়ে বর্তমানে সময়ে এগোনো সম্ভব নয়। যে আইন গত শতাব্দীতে উপযোগী ছিল, পরবর্তী সময়ে সেটিই বোঝা হয়ে দাঁড়ায়।’’

Advertisement

কৃষকদের অবস্থান বিক্ষোভে গত প্রায় ১২ দিন ধরে অবরুদ্ধ দেশের রাজধানী। কৃষক সংগঠন ও সরকারের মধ্যে দফায় দফায় বৈঠকেও সমাধান হয়নি। এই পরিস্থিতিতে আজ নাম না করে সংস্কারের পক্ষে সওয়াল করে সরব হন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘গত শতাব্দীর আইন দিয়ে বর্তমান শতাব্দীর নির্মাণ সম্ভব নয়। সংস্কার ছাড়া উন্নয়ন অসম্ভব। সরকার সেই পথেই হাঁটছে।’’ অতীতের তুলনায় বর্তমান সময়ে কেন সংস্কার কার্যকর হচ্ছে, তার যুক্তি দিয়ে মোদী বলেন, ‘‘আগে নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্র, কিছু বিভাগকে মাথায় রেখে সংস্কার হত। এখন সার্বিক বিষয়কে মাথায় রেখে সংস্কার করার পথে হাঁটা হচ্ছে।’’ এর পর কৃষক আন্দোলন প্রসঙ্গে মোদীর নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘‘সংসদ ডেকে বলুন, কবে ওই কালা কানুন প্রত্যাহার করবেন?’’

কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে বিরোধী দলগুলি তো বটেই, সরকারের পাশে থাকা একাধিক দলও নীতিগত ভাবে ওই আন্দোলনকে সমর্থন করে মুখ খুলেছে। কার্যত এক ঘরে হয়ে পড়া বিজেপিও আজ তাই বিরোধী ঐক্যে ভাঙন ধরাতে বেছে বেছে আক্রমণ শানায়। কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ দাবি করেন, ‘‘সরকার যে সব সংস্কারমুখী পদক্ষেপ নিয়েছে, সেগুলিই কংগ্রেস লোকসভার নির্বাচনী ইস্তাহারে করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। ফলে কংগ্রেসের দ্বিচারিতা এখন প্রকাশ্যে চলে এসেছে।’’ ইউপিএ জমানায় কৃষিমন্ত্রী থাকা শরদ পওয়ারকে আক্রমণ শানিয়ে রবিশঙ্কর বলেন, ‘‘কৃষিমন্ত্রী থাকাকালীন পওয়ার দেশের সব মুখ্যমন্ত্রীদের চিঠি লিখে কৃষিক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থাকে প্রবেশাধিকার দেওয়ার জন্য সওয়াল করেছিলেন। এখন এঁরাই সুযোগ বুঝে উল্টো কথা বলছেন।’’ সে সময়ে কৃষিমন্ত্রী শরদ পওয়ারের লেখা দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতকে লেখা একটি চিঠিও প্রকাশ করে বিজেপি।

Advertisement

আরও পড়ুন: বিরোধী ঐক্যের সূচনা, স্থায়ী হবে কি

আরও পড়ুন: ধর্নায় অখিলেশ আটক, কৃষকের পাশে মায়াবতী

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালও আজ অবস্থানরত কৃষকদের সঙ্গে দেখা করেন। আজ তাই তাঁকেও আক্রমণ করেন রবিশঙ্কর। তিনি বলেন, ‘‘আজ সরকার বিরোধী আন্দোলন থেকে ফায়দা নিতে কেজরীবাল অবস্থান পাল্টেছেন। অথচ ক’দিন আগেই নতুন কৃষি আইন রাজধানীতে বলবৎ করার প্রশ্নে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিলেন। যা ফলাও করে জানানো হয় দিল্লির বিভিন্ন কাগজে।’’

তবে আন্দোলকারী কৃষকদের ভূমিকা নিয়ে একটিও বিতর্কিত মন্তব্য করেননি রবিশঙ্কর। উল্টে আজ কৃষকদের ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘‘যে ভাবে কোনও রাজনৈতিক ছাতার তলায় না এসে কৃষকেরা নিজেদের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তা তারিফযোগ্য।’’ সূত্রের মতে, আন্দোলনের গোড়ার দিকে কৃষকদের উপরে লাঠি, জলকামান চালানো, আন্দোলনকারীদের খালিস্তানপন্থী হিসাবে দাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল তাতে হিতে বিপরীত হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে পঞ্জাব-হরিয়ানার কৃষকদের ওই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে গোটা গো-বলয়ে। সরব দেশের অন্য প্রান্তের কৃষকেরা। এ দিকে বছর ঘুরলেই পশ্চিমবঙ্গ, কেরল, অসম, তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যে নির্বাচন। এই পরিস্থিতিতে কঠোর পদক্ষেপের পরিবর্তে আলোচনায় সমাধান খুঁজছে মোদী সরকার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement