উত্তরকাশীর ভাঙা সুড়ঙ্গে চলছে উদ্ধারকাজ। ছবি: পিটিআই ।
৮ দিনের বেশি হল উত্তরকাশীর ভাঙা সুড়ঙ্গে আটকে বাড়ির ছেলে। ফিরিয়ে আনতে মরিয়া পরিবার। প্রয়োজন হলে ছেলেকে ফেরাতে সর্বস্ব প্রশাসনের হাতে তুলে দিতেও তাঁরা রাজি বলে জানিয়েছেন আটকে থাকা শ্রমিকের পরিবারের সদস্যেরা।
উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশী জেলার ভাঙা সুড়ঙ্গে যে ৪১ জন শ্রমিক আটকে রয়েছেন, তাঁদের মধ্যেই রয়েছেন ২২ বছর বয়সি পুষ্কর সিংহ আইরি। রবিবার সকালে, উত্তরকাশীতে ব্রহ্মকাল-যমুনোত্রী জাতীয় সড়কের উপর সিল্কিয়ারা এবং ডন্ডালহগাঁওের মধ্যে সাড়ে চার কিলোমিটার দীর্ঘ নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গের একাংশ ভেঙে পড়ে। ভিতরে আটকে পড়েন পুষ্করের মতো আরও ৪০ জন শ্রমিক। তার পর ১৯২ ঘণ্টা পার হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও কোনও শ্রমিককে উদ্ধার করা যায়নি। তাই এ বার বাড়ির ছেলেকে ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনের কাছে কাতর আর্তি জানালেন পুষ্করের পরিবার। পুষ্করের পরিবারের এক সদস্যের কথায়, ‘‘প্রয়োজন হলে আমাদের বাড়ি,জমি সব নিয়ে নিন। কিন্তু দয়া করে আমাদের ছেলেকে নিরাপদে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করুন।’’
পুষ্করের বাড়ি উত্তরাখণ্ডের ছেনীগোত এলাকায়। ভাই উত্তরকাশীর ভাঙা সুড়ঙ্গে আটকে খবর পেয়ে তাঁর দাদা বিক্রম অবিলম্বে উত্তরকাশীর উদ্দেশে রওনা দেন। তার পর থেকে তিনি ভাঙা সুড়ঙ্গের কাছেই রয়েছেন। ভাইয়ের বাইরে বেরিয়ে আসার প্রহর গুনছেন। অন্য দিকে, পুষ্করের আটকে পড়ার খবর পাওয়ার পর থেকে তাঁদের মা গঙ্গা দেবী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’কে জানিয়েছেন বিক্রম।
পুষ্করের মামা মহেন্দ্র সিংহ আইরি জানান, দু’মাস আগেই বাড়ি গিয়েছিলেন পুষ্কর। তিনি যে উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে কাজ করতে যাচ্ছেন, তা-ও জানিয়েছিলেন। এর পর, দীপাবলির আগে তিনি আবার ফোন করে পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। সেটাই ছিল পরিবারের সঙ্গে পুষ্করের শেষ কথা। এর পর পুষ্করের আটকে পড়ার খবর পৌঁছয় তাঁর বাড়িতে। তার পর থেকে তাঁর বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় অপেক্ষায় রয়েছে পরিবার। প্রয়োজনে ছেলেকে উদ্ধারের বদলে তাঁদের বাড়ি এবং জমিও প্রশাসনের হাতে তুলে দিতে রাজি পরিবারের সদস্যেরা।
অন্য দিকে, প্রশাসনের উদ্যোগে আটকে পড়া কয়েক জন শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলার পর, তাঁদের পরিবারের সদস্যরা সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, ওই শ্রমিকদের শরীর দুর্বল হয়ে গিয়েছে। কণ্ঠস্বর ক্ষীণ হয়ে আসছে। ধীরে ধীরে তাঁদের শক্তি ফুরোচ্ছে বলেও আশঙ্কা করছেন আটকে থাকা শ্রমিকদের পরিজনেরা। উত্তরাখণ্ড প্রশাসনের তরফে আটকে থাকা শ্রমিকদের পরিবারের জন্য ঘর এবং খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।