সচিনকে সাবধানী হওয়ার পরামর্শ শরদের। —ফাইল চিত্র।
বিগত দু’মাসে এক বারও কৃষকদের নিয়ে মুখ খুলতে দেখা যায়নি। অথচ পপ তারকা রিহানার টুইটের পর সাত তাড়াতাড়ি টুইট করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। তাতে মোদী সরকারের পক্ষ নেওয়ার অভিযোগ উঠছে তাঁর বিরুদ্ধে। তা নিয়ে এ বার সচিন তেন্ডুলকরকে একহাত নিলেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ শরদ পওয়ার। তাঁর মতে ক্রিকেট ছাড়া অন্য কোনও ব্যাপারে মতামত জানানোর আগে সাবধানী হওয়া উচিত ‘ক্রিকেট ঈশ্বর’-এর।
শনিবার পুণে-তে আয়োজিত একটি সভায় অংশ নেন পওয়ার। সেখানেই কৃষক আন্দোলন নিয়ে সচিন-সহ অন্যান্য তারকাদের সাম্প্রতিক মন্তব্য নিয়ে নিজের মতামত জানান তিনি। পওয়ার বলেন, ‘‘কৃষক আন্দোলন নিয়ে ভারতীয় তারকাদের অবস্থানের বিরুদ্ধে অনেকেই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। সচিনকে একটা পরামর্শ দেব, অন্য কোনও বিষয়ে মুখ খোলার আগে সতর্ক হওয়া উচিত ওঁর।’’
গত দু’মাসে কখনও আন্দোলনকারী কৃষকদের গায়ে খালিস্তানি তকমা সেঁটে দেওয়া হয়েছে কখনও আবার সমাজমাধ্যমে তাঁদের জঙ্গি বলে উল্লেখ করছেন কঙ্গনা রানাউতের মতো অভিনেত্রী। তার তীব্র সমালোচনা করেছেন ইউপিএ আমলে কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলানো পওয়ার। তিনি বলেন, ‘‘আন্দোলনকারী কৃষকরা গোটা দেশের অন্নদাতা। তাঁদের খালিস্তানি বা জঙ্গি বলা কখনওই কাম্য নয়। বহু দিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষকরা। আরও গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি ভাবা উচিত সরকারের। এখন তো আন্তর্জাতিক মহলেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে।’’
তবে কৃষক আন্দোলন নিয়ে রিহানা, গ্রেটা থুনবার্গ, মিয়া খলিফা এবং সুজান সারান্ডনের মতো আন্তর্জাতিক তারকারা সরব হওয়ায় দক্ষিণপন্থীদের একাংশ প্রশ্ন তুলছেন। বিদেশমন্ত্রকের তরফে বিষয়টি অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বলে দাবি করা হয়। এ প্রসঙ্গে ২০১৯ সালে আমেরিকার হিউস্টনে ‘হাউডি মোদী’ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর যোগদানের কথা স্মরণ করিয়ে দেন পওয়ার, যেখানে নির্বাচনমুখী আমেরিকায় দাঁড়িয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের হয়ে ‘অব কি বার ট্রাম্প সরকার’ স্লোগান তুলতে দেখা গিয়েছিল মোদীকে। পওয়ার বলেন, ‘‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী এমন কিছু মন্তব্য করেছিলেন সেখানে, যার প্রতিক্রিয়া এখন পাচ্ছি আমরা।’’
পওয়ারের এই মন্তব্যের বিরোধিতা করেছেন বিজেপি সাংসদ মীনাক্ষী লেখি। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘মিয়া খলিফা, রিহানা এবং গ্রেটা থুনবার্গদের কাছেও ওঁর উপদেশ পৌঁছনো উচিত’। কৃষিমন্ত্রী থাকাকালীন পওয়ার নিজেও কৃষিক্ষেত্রে সংশোধন ঘটানোর পক্ষে সুপারিশ করেছিলেন, সে কথাও মনে করিয়ে দেন বিজেপি নেত্রী। গত সপ্তাহে একই প্রসঙ্গ তুলে পওয়ারকে আক্রমণ করেছিলেন বর্তমান কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর। সেই সময় পওয়ার জানান, কৃষিক্ষেত্রে সংশোধন ঘটানোর পক্ষে থাকলেও মণ্ডি ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে চেয়েছিলেন তিনি। ন্যূনতম সহায়ক মূল্য থেকে কৃষকরা যাতে বঞ্চিত না হন, সে ব্যাপারে সচেষ্ট ছিলেন।