মহুয়া মৈত্র। —ফাইল চিত্র।
‘টাকা নিয়ে প্রশ্ন’ কাণ্ডে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা নাগাদ এথিক্স কমিটির সামনে হাজিরা দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। কমিটি সূত্রের খবর, প্রথমে সংসদের প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের কয়েক জনের বয়ান নথিবদ্ধ করা হয়েছে। তার পর কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদের বয়ান নথিবদ্ধ করা হবে। জিজ্ঞাসাবাদ-পর্বের প্রায় আড়াই ঘণ্টা অতিক্রান্ত হওয়ার পর একটি বিরতি হয়। তার পর দ্বিতীয় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে। এথিক্স কমিটির একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে মহুয়াকে দু’টি প্রশ্ন করা হয়েছে।
এক, তিনি ব্যবসায়ী দর্শন হীরানন্দানিকে সংসদের লগ ইন আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিয়েছিলেন কি না। দুই, বিদেশ থেকে মোট ৪৭ বার ওই আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগ ইন করা হয়েছে কি না। অন্য দিকে, মহুয়ার ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে খবর, কৃষ্ণনগরের সাংসদ এথিক্স কমিটিকে জানিয়েছেন, ‘ব্যক্তিগত সম্পর্কের তিক্ততা’ থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, এই বক্তব্যের মাধ্যমে নিজের প্রাক্তন বান্ধব জয় অনন্ত দেহাদ্রাইকেই নিশানা করতে চেয়েছেন মহুয়া।
বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে অভিযোগ তুলেছিলেন যে, মহুয়া তাঁর সংসদের আইডি ব্যবসায়ী দর্শন হীরানন্দানিকে দিয়ে দিয়েছিলেন। তা ব্যবহার করে হীরানন্দানি আদানিদের বিরুদ্ধে প্রশ্ন নথিভুক্ত করতেন। মহুয়া সেগুলিই তুলতেন সংসদে। জড়িয়ে দিতেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নামও। এই প্রসঙ্গে এথিক্স কমিটির প্রধান বিনোদ সোনকর বলেছিলেন, ‘‘সংসদের লগ ইন আইডি সাংসদ বাদ দিয়ে অন্য কারও ব্যবহার করা গুরুতর অপরাধ। যে অভিযোগ উঠেছে, তা সংসদের ইতিহাসে নজিরবিহীন।’’
‘টাকা নিয়ে প্রশ্ন’ কাণ্ডে গত ২৬ অক্টোবর বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত এবং মহুয়ার প্রাক্তন বান্ধব দেহাদ্রাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে এথিক্স কমিটি। এখন দেখার বৃহস্পতিবার মহুয়াকে কী বলে কমিটি। এর আগে মহুয়া লোকসভার এথিক্স কমিটিকে চিঠি দিয়ে জানান, কমিটি গত দু’বছর ধরে কোনও বৈঠক ডাকেনি। পাশাপাশি, কমিটিকে তার লক্ষ্মণরেখাও মনে করিয়ে দেন তৃণমূল সাংসদ। কমিটি সূত্রে জানা যায়, তিনি লেখেন, এথিক্স কমিটি কোনও ফৌজদারি বিষয়ে তদন্ত করতে পারে না। তার জন্য পৃথক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা রয়েছে। মহুয়ার আরও অভিযোগ, সংসদে কেন্দ্রের শাসকদলের যে গরিষ্ঠতা রয়েছে, ক্রমাগত তার অপব্যবহার হচ্ছে। কমিটির ক্ষেত্রেও ঠারেঠোরে সেই অভিযোগ তোলেন তৃণমূল সাংসদ।