এএফপির প্রতীকী ছবি।
জঙ্গিদের গুলিতে আহত হলেন সেনা বাহিনীর এক জওয়ান। মধ্য কাশ্মীরের বদগাম জেলার চারার-ই-শরিফের ঘটনা। এই এলাকার মলহারে আটটি বাড়ি আজ ঘিরে ফেলেন ৫২ নম্বর রাষ্ট্রীয় রাইফেলস, জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের বিশেষ অভিযান বাহিনী ও সিআরপিএফ-এর জওয়ানেরা। নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে খবর ছিল, ওই বাড়িগুলির মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে তিন জন জঙ্গি। বাড়িগুলি থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে আনা গেলেও জঙ্গিদের এখনও নাগাল পায়নি নিরাপত্তা বাহিনী।
বাড়িগুলির মধ্যে তারা আটকে পড়েছে বুঝতে পেরে জঙ্গিরা প্রথমে নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড ছোড়ে। তার পর শুরু হয় গুলিবৃষ্টি। পাল্টা গুলি চালাতে শুরু করে নিরাপত্তা বাহিনীও। জঙ্গিদের ছোড়া গুলিতে জখম হন বাহিনীর এক সদস্য। কাশ্মীর পুলিশের আইজি বিজয় কুমার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আহত জওয়ানের অবস্থা স্থিতিশীল। তাঁর চিকিৎসা চলছে।
আইজি আরও জানিয়েছেন, জঙ্গিরা যাতে আত্মসমর্পণ করে প্রথম থেকেই সেই চেষ্টা চালাচ্ছেন তাঁরা। প্রথমে স্থানীয় বাসিন্দাদের দিয়ে আর্জি জানানো হয়। তার পরে নিয়ে আসা হয় জঙ্গিদের বাড়ির লোককেও। তাঁরাও তাঁদের সন্তানদের পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করতে বলেছেন। কিন্তু রাত পর্যন্ত কোনও জঙ্গিই তা করেনি। বিজয় কুমার জানিয়েছে, সন্ধে নামার পরে তাঁরা অভিযান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে আরও বেশি বাহিনী ও তল্লাশির সামগ্রী আনা হয়েছে। অন্ধকারের সুযোগে জঙ্গিরা যাতে পালাতে না-পারে, তাই সব রকম ব্যবস্থাই করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এ দিকে, আজ ভোর রাতে বদগামের চারার-ই-শরিফেই নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছে এক জঙ্গি। নাওয়াদ এলাকায় জঙ্গিদের লুকিয়ে থাকার খবর ছিল। গত কাল রাতেই সেই এলাকা ঘিরে ফেলেছিল নিরাপত্তা বাহিনী। জঙ্গিরা গুলি চালাতে শুরু করলে প্রত্যাঘাত করে বাহিনী। সারা রাত গুলিযুদ্ধ চলে। ভোরের দিকে নিহত হয় এক জঙ্গি। তবে তার নাম-পরিচয় এখনও জানা যায়নি। আহত হয়েছেন এক সিআরপিএফ জওয়ান। মলহারে যে জঙ্গিরা আটকে রয়েছে, তাদের সঙ্গে গত রাতের ঘটনার কোনও যোগ রয়েছে কি না, তা স্পষ্ট করেনি পুলিশ।
জঙ্গিদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষের মাঝে পড়ে কাশ্মীরের সাধারণ মানুষের মৃত্যুর ঘটনাকে আজ দুর্ভাগ্যজনক বললেন কাশ্মীর পুলিশের ডিজি দিলবাগ সিংহ। গত ১৭ সেপ্টেম্বর কাশ্মীরের বাতামালুতে জঙ্গি ও নিরাপত্তা বাহিনীর গুলির লড়াইয়ের মধ্যে পড়ে আহত হন কৌনসার রিয়াজ় নামে এক মহিলা। পরে তিনি মারা যান। দিলবাগ সেই ঘটনা প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘‘বাহিনী সব সময় চেষ্টা করে এই ধরনের পরিস্থিতি খুব পেশাদারিত্বের সঙ্গে সামাল দেওয়ার। তার পরেও কোনও সাধারণ মানুষের এ ভাবে মৃত্যু হলে তা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।’’