সুপ্রিম কোর্ট। —ফাইল চিত্র ।
ভোটযন্ত্রে মানুষের হস্তক্ষেপের সুযোগ রয়েছে— এ কথা মেনে নিয়েও ভারতের বর্তমান ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া থেকে সরে আসার অসুবিধাগুলিকে তুলে ধরল সুপ্রিম কোর্ট। উড়িয়ে দিল ব্যালট-যুগে ফেরার সম্ভাবনাকেও। আর এই মামলার শুনানিতে বিচারপতির কথায় উঠে এল পশ্চিমবঙ্গের উদাহরণ।
ইভিএমে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়া হল কি না, ভিভিপ্যাট স্লিপের মাধ্যমে তা পর্যবেক্ষণ করার সুযোগ রয়েছে ভোটারের। কিন্তু নির্বাচনী সংস্কার নিয়ে কাজ করতে থাকা সংস্থা, অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মসের (এডিআর) যুক্তি, প্রতিটি বিধানসভায় ২০০টি ভিভিপ্যাট মেশিন থাকলেও ৫টির বেশি গণনা হয় না। তাদের মতে, ভিভিপ্যাট স্লিপ সংগ্রহ করে ব্যালট বাক্সে ফেলার সুযোগ দেওয়া উচিত ভোটারদের। জালিয়াতির সম্ভাবনা আটকাতে প্রতিটি ভিভিপ্যাট স্লিপ গণনার পক্ষে এডিআর। বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিল তারা। আজ এডিআরের আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ যুক্তি দেন, ইউরোপের অধিকাংশ দেশই ইভিএমের বদলে ব্যালটে ভোট করাতে শুরু করেছে। ফলে ভারতেও ব্যালটে ফিরে যাওয়া যেতে পারে, অথবা ভিভিপ্যাট স্লিপ ভোটারদের হাতে দেওয়া হোক। তারা সেটি ব্যালট বাক্সে জমা করবেন।
সওয়াল করতে গিয়ে জার্মানির উদাহরণ টেনে এনেছিলেন প্রশান্ত ভূষণ। সে কথা শুনেই বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের মন্তব্য, ‘‘আমার নিজের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের জনসংখ্যাই জার্মানির থেকে বেশি। আমাদের কাউকে বিশ্বাস করতে হবে। একটা ব্যবস্থাকে ভেঙে ফেলার চেষ্টা করবেন না। এমন উদাহরণও দেবেন না। ইউরোপের উদাহরণ এখানে কাজ করে না।’’ বিচারপতি সঞ্জীব খন্না বলেন, ‘‘ভারতে ভোটারের সংখ্যা ৯৭ কোটি। ব্যালট জমানায় কী ঘটত, সেটা আমরা সবাই জানি। আপনি ভুলে যেতে পারেন, কিন্তু আমরা ভুলিনি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘মানুষের হস্তক্ষেপ না থাকলে যন্ত্র ঠিক ফলাফলই দেয়। হস্তক্ষেপ হলেই সমস্যা। যন্ত্রের কাছাকাছি থেকে মানুষই অবৈধ ভাবে ব্যবস্থার বদল ঘটাতে পারে।’’