প্রতীকী ছবি।
চিকিৎসাবিদ্যার স্নাতক পাঠ্যক্রম এমবিবিএস পাশ করার পরে মডার্ন মেডিসিনের বিভিন্ন শাখায় নির্দিষ্ট সময় ধরে ইন্টার্নশিপ করতে হয় ছাত্রছাত্রীদের। মেডিসিন, স্ত্রীরোগ, শল্য, নাক-কান-গলা এবং অন্যান্য শাখায় হাতেকলমে রোগী দেখে অভিজ্ঞতা অর্জনের পরে ডিগ্রি পান তাঁরা। এ বার সেই ইন্টার্নশিপের পরিসরের মধ্যে অতিরিক্ত ঐচ্ছিক হিসেবে ঢোকানো হচ্ছে আয়ুষকে।
ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের (এনএমসি) একটি খসড়া প্রস্তাবে জানানো হয়েছে, এ বার অতিরিক্ত ঐচ্ছিক হিসেবে আয়ুর্বেদ, হোমিয়োপ্যাথি, ইউনানির মতো বিষয়েও হাতেকলমে প্রশিক্ষণ নিতে হবে। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই ‘মিক্সোপ্যাথি’র বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিভিন্ন চিকিৎসক সংগঠন।
চিকিৎসা শিক্ষা বিষয়ক নিয়ামক সংস্থা ‘কম্পালসরি রোটেটিং ইন্টার্নশিপ’ নীতি নিয়ে একটি খসড়া তৈরি শুরু করেছিল। বুধবার সেটি হাতে আসার পরে দেখা যায়, নিয়মে খুব পরিবর্তন না-হলেও তার সঙ্গে জুড়েছে ‘ইন্ডিয়ান সিস্টেম অব মেডিসিন’। অর্থাৎ আয়ুষ। তাতে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট কলেজে যদি হোমিয়োপ্যাথি, আয়ুর্বেদ, যোগ ও নেচারোপ্যাথি, ইউনানি কিংবা সিদ্ধার মতো বিষয় থাকে, তা হলে ইন্টার্নদের সেই শাখাতেও যুক্ত থাকতে হবে এক সপ্তাহের জন্য। ‘‘মিক্সোপ্যাথিকে কখনওই সমর্থন করি না। প্রথম থেকেই এর প্রতিবাদ করেছি। শুক্রবার (আজ) দিল্লি যাচ্ছি আইএমএ-র বৈঠকে। সেখানে এই বিষয়ে আলোচনা করব। এনএমসি-কে চিঠিও দেওয়া হবে। বিষয়টি সংসদেও তুলব,’’ বলেন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য শাখার সম্পাদক শান্তনু সেন।
‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর্স ফোরাম’-এর তরফে চিকিৎসক কৌশিক চাকী বলেন, ‘‘নীতিনির্ধারকেরা যে-হাঁসজারু বা বকচ্ছপ মার্কা চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রবর্তনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন, তাতে এমনটা হওয়াই স্বাভাবিক! অন্য কিছু হলেই বরং আশ্চর্য হতাম! এটা সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক এবং মধ্যযুগীয় চিন্তাধারার ফসল।’’
এনএমসি যখন থেকে ব্রিজ কোর্স, মিক্সোপ্যাথি ইত্যাদি নিয়ে আসার চেষ্টা করছে, তখন থেকেই তাঁরা বিরোধিতা করছেন বলে জানান ‘অ্যাসোসিয়েশন অফ হেল্থ সার্ভিসেস ডক্টর্স’-এর সাধারণ সম্পাদক মানস গুমটা। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই বলেন, ‘‘ব্রিজ কোর্সের মাধ্যমে আয়ুষ ও অপ্রশিক্ষিত চিকিৎসকদের মডার্ন মেডিসিনে যুক্ত হওয়ার সুযোগের প্রতিবাদ চলছে সারা দেশে। সেখানে এমন সিদ্ধান্ত ঠিক নয়।’’