Delhi AIIMS

এমসের সামনেই পথ-ওপিডি ডাক্তারদের

আমজনতার অসুবিধের কথা ভেবে আজ চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে পথেই ওপিডি খোলা হয়েছিল। প্রায় ৩৬ ধরনের রোগের চিকিৎসার জন্য ওপিডি খোলেন এমসের চিকিৎসকেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০২৪ ০৮:১৭
Share:

আরজি কর-কাণ্ডে দিল্লি এমসের ডাক্তারদের প্রতিবাদ মিছিল। —ফাইল ছবি।

হাসপাতালে কর্মবিরতি। পথে অবস্থান-বিক্ষোভ। রোগীদের কথা ভেবে তাই বিক্ষোভ মঞ্চ থেকেই বহির্বিভাগ (ওপিডি)-এর পরিষেবা দেওয়া শুরু করলেন এমসের চিকিৎসকেরা। পথেই চলল রোগী দেখা। রাজধানীতে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সামনে ওই পথ-ওপিডি চালু থাকবে আগামী দিনেও। এ দিকে আজ চিকিৎসকদের দাবি দাওয়া নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে করেন চিকিৎসকদের একাংশ। বৈঠক শেষে চিকিৎসকেরা জানান, রফাসূত্র না মেলায় আগামী দিনেও আন্দোলন চালু থাকবে। অন্য দিকে চিকিৎসকদের সুরক্ষায় কেন্দ্রীয় হাসপাতালগুলিতে অতিরিক্ত মার্শাল নিয়োগে ছাড়পত্র দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক।

Advertisement

এ দিকে আরজি কর কাণ্ডের প্রেক্ষিতে রবিবার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা হাতে নিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। আগামিকাল, মঙ্গলবার আদালত খুললেই প্রথমে ওই মামলাটি শুনবেন প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়-সহ তিন সদস্যের বেঞ্চ। প্রধান বিচারপতি ছাড়াও ওই বেঞ্চে থাকবেন বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা ও বিচারপতি মনোজ মিশ্র।

গত কয়েক দিনের মতোই আজও অচলাবস্থা জারি ছিল দিল্লির সরকারি হাসপাতালগুলিতে। আরজি কর কাণ্ডের প্রেক্ষিতে আজও কর্মবিরতি পালন করেন এমস, রামমনোহর লোহিয়া হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসকেরা। পরে এমসের চিকিৎসকদের একটি দল নির্মাণ ভবনে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সামনে গত কয়েক দিনের মতো আজও বিক্ষোভ দেখান। তবে আমজনতার অসুবিধের কথা ভেবে আজ চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে পথেই ওপিডি খোলা হয়েছিল। প্রায় ৩৬ ধরনের রোগের চিকিৎসার জন্য ওপিডি খোলেন এমসের চিকিৎসকেরা। পথচলতি অনেক মানুষকেই এমসের চিকিৎসকদের কাছে নিজের সমস্যা জানিয়ে চিকিৎসা করাতে দেখা যায়। আগামী দিনেও সকাল এগারোটা থেকে পথেই ওই পরিষেবা দেওয়া হবে। এ দিকে কর্মরত চিকিৎসকদের নিরাপত্তার বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিল ফেডারেশন অব অল ইন্ডিয়া মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (এফএআইএমএ)। বৈঠকের শেষে চিকিৎসকদের ওই সংগঠন জানিয়েছে, আলোচনায় ঐকমত্য না হওয়ায় তাঁদের কর্মবিরতি বজায় থাকবে। পাশাপাশি সংগঠন জানিয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট আগামী দিনে এ বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেয় সে দিকে নজর রাখছে সংগঠন।

Advertisement

চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় হাসপাতালগুলি বাড়তি নিরাপত্তারক্ষী (মার্শাল) নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। আজ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব অপূর্ব চন্দ্র জানিয়েছেন, প্রতিটি কেন্দ্রীয় হাসপাতালে পঁচিশ শতাংশ অতিরিক্ত নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই নিয়োগ দ্রুত কার্যকর হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, যদি কোনও হাসপাতালের আরও বেশি নিরাপত্তারক্ষী প্রয়োজন হয় তবে তাও তাদের দেওয়া হবে।

আরজি কর কাণ্ডের প্রেক্ষিতে অধিকাংশ চিকিৎসক সংগঠনের পক্ষ থেকে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা দেওয়ার প্রশ্নে কেন্দ্রীয় আইনের পক্ষে সওয়াল করা হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ব্যাখ্যা, হাসপাতালেই রোগীর পরিবারের হাতে চিকিৎসকেরা সবচেয়ে বেশি নিগৃহীত হয়ে থাকেন। সেই বিষয়টি মাথায় রেখে চিকিৎসকদের নিগ্রহ রুখতে পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরাখণ্ড, হরিয়ানা, দিল্লি, অসমের মতো ২৬টি রাজ্য ইতিমধ্যেই আইন প্রণয়ন করেছে। যদিও আরজি করে যা হয়েছে তা ফৌজদারি অপরাধ। তাই আরজি কর কাণ্ডের কথা মাথায় রেখে কেন্দ্রীয় আইন আনার যে দাবি তোলা হচ্ছে তাতে পরিস্থিতির বিশেষ কিছু পরিবর্তন হবে না। স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, সে কারণেই চিকিৎসকদের নিরাপত্তা, তাঁদের বিশ্রাম নেওয়ার জন্য আলাদা ঘরের ব্যবস্থা কী ভাবে করা সম্ভব, কাজের পরিবেশ উন্নত কী ভাবে করা যায় সেই বিষয়গুলি খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যেই ডিরেক্টর জেনারেল অব হেল্‌থ সার্ভিস-এর তত্ত্বাবধানে একটি কমিটি গড়া হয়েছে। যারা বিভিন্ন রাজ্যের সঙ্গে কথা বলে একটি রিপোর্ট কেন্দ্রকে জমা দেবে। যার ভিত্তিতে আগামী দিনে পদক্ষেপ করা হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement