Delhi Violence

‘আমাদের মসজিদ জ্বলেছে, বাঁচাব শিবমন্দির’

আশেপাশের অঞ্চলে গোষ্ঠী সংঘর্ষ ভয়ঙ্কর রূপ নিলেও এই অঞ্চলের বাসিন্দারা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রুখে দিয়েছেন সংঘর্ষ। তুলে ধরেছেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য নজির।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:০৪
Share:

ফাইল চিত্র।

দিল্লি সংঘর্ষে হাহাকারের মধ্যেই সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল ছবি উঠে এল পুরনো মুস্তাফাবাদের বাবুনগরে। মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলে শিব মন্দির রক্ষায় ত্রাতা হয়ে উঠলেন মুসলিমরাই।

Advertisement

আশেপাশের অঞ্চলে গোষ্ঠী সংঘর্ষ ভয়ঙ্কর রূপ নিলেও এই অঞ্চলের বাসিন্দারা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রুখে দিয়েছেন সংঘর্ষ। তুলে ধরেছেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য নজির। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত দেশবন্ধু কলেজের পড়ুয়া মহম্মদ হাসিন এমনই এক জন। বছর চব্বিশের এই পড়ুয়ার কথায়, ‘‘পরিস্থিতি যেমনই হোক, আমরা চেয়েছিলাম সব সময়েই ঐক্যবদ্ধ থাকতে। যাতে হিংস্র জনতার মোকাবিলা করা যায়।’’ যে কোনও মূল্যে পারস্পরিক বিশ্বাস ও সৌভ্রাত্র অটুট রাখাই ছিল তাঁদের সংকল্প। সে জন্যে মন্দির বাঁচাতে ওই কয়েকটা দিন পালা করে নজরদারি করেছেন তাঁরা। হাসিনের কথায়, ‘‘দুই ধর্মের মানুষই ছোট ছোট দল তৈরি করে সতর্ক থেকেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় হাতে তুলে নিয়েছিলাম লাঠি।’’

মন্দির থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে থাকেন কামরুদ্দিন। স্থানীয় চায়ের দোকানে খাবার সরবরাহ করে পেট চলে তাঁর। এ হেন কামরুদ্দিনের গলাতেও সম্প্রীতির সুর। ‘‘দীর্ঘদিন ধরে আমরা একসঙ্গে রয়েছি। কখনও সংঘর্ষের কথা ভাবতেই পারিনি। এই কঠিন সময়ে মানবতা রক্ষা করাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। মসজিদ জ্বলে গিয়েছে জানি, কিন্তু মন্দিরে কোনও আঁচ লাগতে দেব না।’’

Advertisement

গত ৩০-৩৫ বছর ধরে মন্দিরের তত্ত্বাবধায়ক রীনা (৫২)। দৈনন্দিন পুজোর সমস্ত দায়িত্বই তাঁর। এই বিপদের সময়ে তিনিও ধর্ম বিচার না করে আস্থা রেখেছেন ভিন্ ধর্মের ভাইদের উপরেই। তুলে দিয়েছেন মন্দিরের চাবি। ‘‘ওরা তো নিজেদেরই লোক। গত কয়েক দিন মন্দিরে যেতে পারিনি। কিন্তু আমি নিশ্চিত ছিলাম, ওরা থাকতে মন্দিরের কোনও ক্ষতি হবে না। এত দিন একসঙ্গে রয়েছি। পরিস্থিতি খারাপ বলে কি সব বদলে যাবে? আমরা পৃথক ভাবে ধর্মাচরণ করলেও ঈশ্বর তো একই,’’ বলেন রীনা। তাই মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলেও নিজের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত নন ৫২ বছরের এই মহিলা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement