Delhi Violence

‘চেহারায় তো হিন্দু মনে হচ্ছে না’

ফতিমা একটি ওয়েবসাইটে লিখেছেন, ভিড়ের মধ্যে থেকে এক জন তাঁর সঙ্গী সাংবাদিককে ফতিমার নাম জিজ্ঞাসা করেন। সঙ্গী সাংবাদিকটা চটপট একটি ‘হিন্দু’ নাম বলেন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০২০ ০৫:৪২
Share:

দিল্লিতে সংঘর্ষে মৃতদের আত্মার শান্তি কামনায় প্রার্থনা। শামিল সব ধর্মের মানুষ। ছবি: এএফপি

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, পোশাক দেখেই বোঝা যায়, কারা অশান্তি করছে। উত্তর-পূর্ব দিল্লির মৌজপুর এলাকায় গিয়ে সেই মন্তব্যের কথাই মনে হয়েছিল দিল্লির এক সাংবাদিক ফতিমা খানের।

Advertisement

সম্প্রতি জাফরাবাদ-মৌজপুর এলাকায় সংবাদসংগ্রহের জন্য গিয়ে এক জনতার মুখোমুখি পড়েন তিনি এবং এক সহকর্মী। সিএএ-র সমর্থনে স্লোগান থেকে আচমকাই শুরু হয় ‘গোলি মারো শালো কো’ ধ্বনি। ফতিমা একটি ওয়েবসাইটে লিখেছেন, ভিড়ের মধ্যে থেকে এক জন তাঁর সঙ্গী সাংবাদিককে ফতিমার নাম জিজ্ঞাসা করেন। সঙ্গী সাংবাদিকটা চটপট একটি ‘হিন্দু’ নাম বলেন। লোকটির সন্দেহ কাটেনি। তাকে ফতিমা বলতে শোনেন, ‘শকল সে হিন্দু নহি দিখতি’, চেহারা দেখে তো হিন্দু মনে হচ্ছে না। তবে সন্দেহ করলেও আর বেশি এগোয়নি লোকটি। তবে এর পর এক দিন উপদ্রুত এলাকায় ‘জয় শ্রী রাম’ ধ্বনি দেওয়া জনতার একজন লাঠি নিয়ে ফতিমা এবং আর এক সাংবাদিকের পিছু নেন।

মৌজপুরের পরিস্থিতি দেখতে গিয়ে মোটামুটি একই অভিজ্ঞতা হয়েছিল সাংবাদিক ইসমত আরারও। একটি ওয়েবসাইটে ইসমত লিখেছেন, ওখানে যাওয়ার আগে অনেকে তাঁকে সতর্ক করেছেন বারবার। মৌজপুর এলাকায় ঢুকে তাই তিনি আর মোবাইল ফোন বার করেননি। কেবল এলাকায় হেঁটেছেন।

Advertisement

এক ব্যক্তিকে দেখে ইসমত প্রশ্ন করেছেন, ‘‘ভাই, এখানে কী হচ্ছে?’’ জবাব আসে, ‘‘সব কিছু হচ্ছে। আপনি দেখে আসুন না...।’’ ইসমত লিখেছেন, মৌজপুরে ঠিক কী কী দেখতে হয়েছে তাঁকে। তাঁর কথায়, ‘‘এক জায়গায় দেখলাম ইটের টুকরো জড়ো করে রাখা।’’ বন্ধু তারিক এসেছিলেন তাঁকে ওখানে ছাড়তে। দু’জনেই নিজেদের অন্য নাম ভেবে রেখেছিলেন। কেউ কিছু জিজ্ঞেস করলে কী বলবেন, আগে থেকে ভেবে রেখেছিলেন তা-ও। কিছুটা হাঁটার পরে একটা বড় জমায়েত দেখতে পান ইসমত। তাঁর দাবি, সেখানে গেরুয়া পোশাকে এক জন উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলছিলেন। তিনি গেরুয়া পোশাকধারীর পরিচয় জানতে চেয়েছিলেন।

তখন ইসমতকেই প্রশ্ন করা হয়, তিনি কে? ইসমত জানাচ্ছেন, কোনও মতে এড়িয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করলেও কিছু লোক তাঁর পিছু নেয়। সঙ্গী তারিকও ফোন করে জানান, কয়েক জন অনুসরণ করছে তাঁকে। মৌজপুরের অলিগলি ঘুরে একটি বাড়ির সামনে থামেন ইসমত। সেখানে কয়েক জন মহিলা বসেছিলেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন। অনুসরণকারীরা যখন তাঁর উপরে চড়াও হতে যাচ্ছিল, তখন ওই মহিলারাই তাঁকে বাঁচান।

এর পরে বড় রাস্তা পর্যন্ত এগোতে গিয়ে তাঁকে নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে বলে দাবি ইসমতের। মোট তিন ঘণ্টা মৌজপুরে ছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত অন্য এক সংবাদমাধ্যমের কর্মী তাঁকে গাড়িতে তুলে মেট্রো স্টেশন পর্যন্ত পৌঁছে দেন। এখন ইসমত বলছেন, ‘‘অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement