অরবিন্দ কেজরীওয়াল। —ফাইল চিত্র।
দিল্লির উপরাজ্যপাল ভি কে সাক্সেনার সঙ্গে শাসক দল আপের চাপানউতোর ক্রমশ বাড়ছে। এ বার সাক্সেনার অভিযোগ, তিহাড় জেলে বন্দি আপ আহ্বায়ক তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল ইচ্ছাকৃত ভাবে কম ক্যালোরির খাবার খাচ্ছেন। জেল সুপারের দেওয়া রিপোর্ট উল্লেখ করে দিল্লির মুখ্যসচিবকে লেখা চিঠিতে কেজরীওয়ালের শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে উপরাজ্যপাল লিখেছেন, বাড়ির খাবার খাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও কেজরীর এই শারীরিক পরিস্থিতি। চিকিৎসকেরা যে মেডিক্যাল ডায়েট ও ওষুধ দিয়েছেন কেজরীকে, তা তিনি মেনে চলছেন না বলে অভিযোগ সাক্সেনার। এমনকি টাইপ টু ডায়াবিটিস থাকা সত্ত্বেও কেজরী ঠিক মতো ইনসুলিন নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ।
আপের তরফেও কেজরীওয়ালের শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। তবে উপরাজ্যপালের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন আপ নেতৃত্ব। আজ অতিশী জানিয়েছেন, জেল হেফাজতে থাকাকালীন আট বারেরও বেশি কেজরীর রক্তে শর্করার পরিমাণ প্রতি ডেসিলিটারে ৫০ মিলিগ্রামের নীচে নেমে গিয়েছে। যার ফলে ব্রেন স্ট্রোক কিংবা কোমায় চলে যেতে পারতেন মুখ্যমন্ত্রী। গোটা পরিস্থিতির জন্য জেল কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করেছে আপ। উল্লেখ্য কেজরীর জামিনের আবেদনেও একাধিক বার তাঁর শারীরিক অবস্থার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
উপরাজ্যপালের অফিস অবশ্য জানিয়েছে, কেজরীর মেডিক্যাল রিপোর্টে অসঙ্গতি দেখা গিয়েছে। অধিকাংশ দিনেই গ্লুকোমিটার টেস্ট রিডিং এবং কন্টিনিউয়াস গ্লুকোজ় মনিটরিং সিস্টেম রিডিংয়ের মধ্যে পার্থক্য দেখা গিয়েছে। লোকসভা ভোটের প্রচার সেরে ২ জুন জেলে ফিরে যাওয়া থাকা এখনও পর্যন্ত কেজরীর ওজন ২ কিলোগ্রাম কমে গিয়েছে বলেও উল্লেখ চিঠিতে উল্লেখ করেছেন উপরাজ্যপাল। এর পিছনে কম ক্যালোরির খাবারকেই দায়ী করা হয়েছে। উপরাজ্যপাল উল্লেখ করেছেন, ৬ জুন থেকে ১৩ জুলাইয়ের মধ্যে কেজরী চিকিৎসকের দেওয়া ‘ডায়েট’ অনুসরণ করেননি। রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৮ জুন ইনসুলিন নেননি মুখ্যমন্ত্রী অথবা তা নথিভুক্ত করেননি জেল কর্তৃপক্ষ। ৭ জুলাই রাতের খাবার খাওয়ার আগে কেজরী ইনসুলিন নেননি বলেও উল্লেখ করেন সাক্সেনা।
উপরাজ্যপালের ওই চিঠির তীব্র সমালোচনা করেছেন আপ নেতা সঞ্জয় সিংহ। এক্সে তিনি লিখেছেন, ‘এ কী ধরনের মজা এলজি (উপরাজ্যপাল) স্যর? কেউ কি রাতে নিজের সুগার লেভেল কমিয়ে দেবে? যা বিপজ্জনক। আপনার যদি রোগের বিষয়ে না জানা থাকে, তা হলে এ ধরনের চিঠি লেখা উচিত নয়।’ আপ নেতা সৌরভ ভরদ্বাজের কটাক্ষ, “আমি জানতাম উপরাজ্যপাল সিমেন্ট নির্মাণ সংস্থায় কাজ করতেন। জানতাম না তিনি ডায়াবিটিস বিশেষজ্ঞ।”