দিল্লির হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ড। — ফাইল চিত্র।
মাত্র পাঁচটি বেডের অনুমোদন ছিল, কিন্তু সেই ওয়ার্ডে ছিল ১২ জন সদ্যোজাত! দিল্লির শিশু হাসপাতালের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রকাশ্যে এল এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। এর আগে ওই হাসপাতালের অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা এবং নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল।
পূর্ব দিল্লির বিবেকবিহার এলাকার এক শিশু হাসপাতালে গত শনিবার রাতের দিকে ভয়াবহ আগুন লাগে। দ্রুত সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে। সেই আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয় সাত সদ্যোজাতের। জানা যায়, অক্সিজেন সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ফলেই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটেছে। ওই হাসপাতালের উপর তলায় অক্সিজেন সিলিন্ডার রিফিলিংয়ের কাজ চলছিল। সে সময়ই বিস্ফোরণ ঘটে।
ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ ওই হাসপাতালের মালিক এবং এক চিকিৎসককে গ্রেফতার করেছে। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, ২০২১ সালে এই হাসপাতালের নাম নথিভুক্ত করা হয়েছিল। ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত হাসপাতালের লাইসেন্সের মেয়াদ ছিল। লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও কী ভাবে হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
আরও জানা গিয়েছে, রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই হাসপাতাল চালানোর অভিযোগে ২০২১ সালে সেখানে সরকারি আধিকারিকেরা অভিযানও চালিয়েছিলেন। বিবেকবিহার এলাকার এক আবাসন কমপ্লেক্সে হাসপাতালটি চলছিল। এমনকি, দমকলের ছাড়পত্রও ছিল না বলে জানা গিয়েছে। তার পরও কী ভাবে রমরমিয়ে ওই হাসপাতাল চলছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
গত শনিবার রাতে আগুন লাগার ঘটনা নজরে আসতেই সময় নষ্ট না করে সদ্যোজাতদের বাঁচাতে হাসপাতালে ঢুকে পড়েন স্থানীয়েরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্থানীয় বাসিন্দা এবং এলাকার একটি অলাভজনক সংস্থা ‘শহিদ সেবাদল’ সংস্থার সদস্যেরাই প্রথম উদ্ধারকাজে নামেন। এক দল বাসিন্দা হাসপাতালের পিছনের দিকের পাঁচিল টপকে ভিতরে ঢোকেন। তার পর পাইপ বেয়ে উপরে উঠে সোজা পৌঁছে যান সদ্যোজাতদের ওয়ার্ডে। কয়েকটি শিশুকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন তাঁরা। জানা যায়, ১২ জনের মধ্যে পাঁচ জনের জীবন বাঁচাতে পেরেছেন। মৃত্যু হয় সাত জনের।