দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল। — ফাইল চিত্র।
আবগারি মামলায় কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআইয়ের গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ করে দিল্লি হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন আম আদমি পার্টির (আপ) প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল। সেই মামলায় মঙ্গলবার সিবিআইয়ের কাছে জবাব চাইল আদালত। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে সাত দিনের সময়ও বেঁধে দিয়েছেন বিচারপতি নীনা বনসল কৃষ্ণা।
গত ২৫ জুন ইডির আবেদন মেনে বিচারপতি সুধীরকুমার জৈন এবং বিচারপতি রবীন্দ্র দুদেজার অবকাশকালীন বেঞ্চ কেজরীর জামিন খারিজ করে দেয়। এর পরে তিহাড়ে বন্দি কেজরীকে রাউস অ্যাভিনিউ আদালতের অনুমোদনে হেফাজতে নেয় আবগারি মামলার আর এক তদন্তকারী কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই। সেই গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কেজরীওয়াল।
মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি নীনা বনসল কৃষ্ণার সামনে একাধিক বিষয় তুলে ধরেছেন কেজরীওয়াল। তিনি জানান, বছরখানেক আগে কেবল এক জন সাক্ষী হিসাবে আবগারি মামলায় সিবিআই তাঁকে তলব করেছিল। তবে হঠাৎ বিচার বিভাগীয় হেফাজতে থাকাকালীনই গ্রেফতার করা হয়। তাঁকে গ্রেফতার করার প্রেক্ষিতে সিবিআই নতুন করে কোনও প্রমাণ দাখিল করতে পারেনি।
এ ছাড়াও সুপ্রিম কোর্টে সলিসিটর জেনারেল যে বিবৃতি দিয়েছিলেন, সেখানে তিনি উল্লেখ করেছিলেন, ৩ জুলাইয়ের মধ্যে চূড়ান্ত চার্জশিট দাখিল করা হবে। এমনকি বলা হয়েছিল, তদন্ত প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে। সেখানে নতুন করে কোনও গ্রেফতারি কথা বলা ছিল না। তার পরও সিবিআই এমন পদক্ষেপ করেছে বলে কেজরীওয়াল তাঁর আবেদনে জানান। হাই কোর্ট এই মামলায় সিবিআইয়ের জবাব তলব করেছে। কেজরীর মামলার পরবর্তী শুনানি ১৭ জুলাই।
উল্লেখ্য, দিল্লির আবগারি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য ন’বার কেজরীওয়ালকে তলব করেছিল ইডি। কিন্তু এক বারও তিনি ইডি দফতরে হাজিরা দেননি। এর পর আবগারি মামলায় গত ২১ মার্চ কেজরীকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। লোকসভা ভোটের আগে প্রচারের জন্য তাঁকে অন্তর্বর্তী জামিন দেওয়া হয়েছিল। সেই মেয়াদ শেষ হলে আবার তিনি তিহাড় জেলে ফিরে গিয়েছিলেন।
দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালত কেজরীর স্থায়ী জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছিল। ইডির তরফে বৃহস্পতিবার কেজরীর জামিন ৪৮ ঘণ্টা পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করা হলেও বিচারক ন্যায় বিন্দু এক লক্ষ টাকার বন্ডে জামিন দিয়েছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে শুক্রবার দিল্লি হাই কোর্টে আবেদন করেছিল ওই মামলার ইডি। দিল্লি হাই কোর্টে ইডির তরফে অভিযোগ করা হয়, ‘বেআইনি আর্থিক লেনদেন প্রতিরোধ আইন’ (পিএমএলএ)-এর ৪৫ নম্বর ধারা অনুযায়ী জামিনের বিরোধিতা করে জমা দেওয়া নথিগুলির যথাযথ ভাবে বিবেচনা করার কথা ছিল রাউস অ্যাভিনিউ আদালতের। কিন্তু বিচারক বিন্দু তা করেননি। দিল্লি হাই কোর্ট কেজরীর জামিন খারিজ করার দিনই জেলে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। পাশাপাশি, তাঁকে আদালতে হাজির করানোর আবেদনও করা হয়। ২৬ জুন দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে সশরীরে হাজির করানো হয় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে। সেখানেই তাঁকে গ্রেফতার করে নিজেদের হেফাজতে নেয় সিবিআই।