মহুয়া মৈত্রের আবেদন খারিজ দিল্লি হাই কোর্টে। — ফাইল চিত্র।
মহুয়া মৈত্রর আবেদন খারিজ করে দিল দিল্লি হাই কোর্ট। ‘বার অ্যান্ড বেঞ্চ’ (আইন আদালত সংক্রান্ত সংবাদমাধ্যম)-এ প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, আদালতে তৃণমূলের বহিষ্কৃত সাংসদের দাবি ছিল, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা বিদেশি মুদ্রা লেনদেন আইন বা ফেমা লঙ্ঘন করার অভিযোগের বিষয়ে খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। সেই খবর প্রকাশ করছে ইডি। সেই অভিযোগ তুলেই কেন্দ্রীয় সংস্থার বিরুদ্ধে দিল্লি হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন মহুয়া। শুক্রবার তৃণমূল নেত্রীর মামলা খারিজ করে দিলেন বিচারপতি সুব্রহ্মণ্যম প্রসাদ।
আর্থিক বেনিয়মের মামলায় নাম জড়িয়েছে মহুয়ার। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযাগ, তিনি ফেমা আইন লঙ্ঘন করেছেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে ইডি। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি মহুয়াকে প্রথম বার এই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে নোটিস পাঠানো হয়। ১৯ ফেব্রুয়ারি হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল। তবে মহুয়া হাজিরা দেওয়ার জন্য কিছুটা সময় চেয়ে নেন তদন্তকারী সংস্থার থেকে। তার মধ্যে আবারও চিঠি পাঠায় ইডি।
তার পরই মহুয়া আদালতের দ্বারস্থ হন। তৃণমূল নেত্রীর দাবি ছিল, তদন্ত শুরু হয়নি। তার আগেই কেন তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করা হচ্ছে। মহুয়ার আবেদন ছিল, তদন্ত চলাকালীন তাঁকে নিয়ে যেন কোনও ‘গোপন বা প্রমাণিত না হওয়া’ তথ্য ফাঁস না করে ইডি। এমনকি সংবাদমাধ্যমেও যেন সেই খবর প্রকাশিত না হয় তা নিশ্চিত করতেই মামলা করেন তৃণমূল নেত্রী।
গত ডিসেম্বরে লোকসভার সাংসদ পদ থেকে বহিষ্কার করা হয় মহুয়াকে। ‘ঘুষের বিনিময়ে প্রশ্ন’কাণ্ডে মহুয়াকে বহিষ্কার করার সুপারিশ করেছিল লোকসভার এথিক্স কমিটি। ৪৯৫ পৃষ্ঠার রিপোর্ট তারা জমা দেয়। ওই রিপোর্ট পড়ে দেখার জন্য সময় চেয়েছিল তৃণমূল। কংগ্রেস এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলির তরফেও স্পিকারের কাছে সময় দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু স্পিকার সময় দেননি। বহিষ্কারের পর মহুয়া জানিয়েছিলেন, এই ঘটনার শেষ দেখে ছাড়বেন তিনি। আগামী ৩০ বছর লোকসভার ভিতরে এবং বাইরে লড়াই করবেন। এই বহিষ্কারের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তিনি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। সেখানে এখনও মামলাটি বিচারাধীন।
মহুয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ব্যবসায়ী দর্শন হীরানন্দানির কাছ থেকে উপহার ও টাকা নিয়ে সংসদে শিল্পপতি গৌতম আদানির সংস্থার বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। সেই প্রশ্নে তিনি আদানির সঙ্গে জুড়ে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও। সাংসদের লগইন আইডি ও পাসওয়ার্ডও দর্শনকে মহুয়া দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ ছিল বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবের। একই অভিযোগ করেছিলেন মহুয়ার প্রাক্তন বান্ধব আইনজীবী জয় দেহাদ্রাই। মহুয়া জানান, বন্ধু দর্শনকে তিনি আইডি, পাসওয়ার্ড দিয়েছিলেন শুধুমাত্র তাঁর প্রশ্নগুলি ‘টাইপ’ করে দেওয়ার জন্য। কৃষ্ণনগরের বহিষ্কৃত সাংসদের এ-ও দাবি, ওই সংক্রান্ত কোনও নির্দিষ্ট নিয়ম বা বিধি নেই।