টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন রাজধানী। ছবি: পিটিআই ।
কারও বাড়িঘর ভেসে গিয়েছে, তো কারও কপালে গত দু’দিনে একটা দানাও জোটেনি। পরিবারকে নিয়ে কোনও রকমে উঁচু দালান বা আশ্রয় শিবিরে ঠাঁই হয়েছে। জলমগ্ন দিল্লির জায়গায় জায়গায় ধরা পড়ছে এ রকমই অসহায়তার ছবি।
যমুনার জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় সব থেকে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছেন দিল্লির নিচু এলাকার বাসিন্দারা। এলাকাগুলির প্রায় সব বাড়িতেই জল ঢুকেছে। সরকারের ত্রাণ শিবিরে থাকতে হচ্ছে বহু মানুষকে। যমুনার জল বাড়তে থাকায় ওয়াজ়িরাবাদ, চন্দ্রওয়াল এবং ওখলা জল শোধনাগারগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে রাজধানী পানীয় জলের সঙ্কটের মুখে দাঁড়িয়ে। জলের জন্য নলকূপের সামনে বালতি নিয়ে ভিড় জমাচ্ছেন বাসিন্দারা। পাশাপাশি দোকানবাজার বন্ধ থাকায় খাবারের জন্যও হাহাকার শুরু হয়েছে।
বন্যা পরিস্থিতির জেরে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে রাজধানীর সবচেয়ে বড় শ্মশান নিগমবোধ ঘাট। যমুনার তীরে রিং রোডে রয়েছে এই শ্মশান। প্লাবন পরিস্থিতির কারণে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যার ফলে প্রিয়জনের শেষকৃত্য সম্পন্ন করতেও বিপাকে পড়ছেন দিল্লিবাসীরা।
প্লাবিত দিল্লির সবচেয়ে বড় শ্মশান নিগমবোধ ঘাট। ছবি: টুইটার।
কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে যমুনার জল বেড়ে রাজধানীর বহু এলাকা জলমগ্ন। যমুনার জলে ভেসে গিয়েছে দিল্লির বহু বাড়িঘর, বাজার, রাস্তাঘাট, পর্যটনস্থল। অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে জনজীবন। রাজধানীর কোথাও কোমর পর্যন্ত আবার কোথাও বুক পর্যন্ত জল। বহু রাস্তায় বন্ধ হয়েছে যান চলাচলও।
উল্লেখযোগ্য যে, শুক্রবার সন্ধ্যায় যমুনার জলস্তর সামান্য কমে ২০৮.২৭ মিটারে নেমেছিল। কিন্তু শনিবার সকালে তা আবার বেড়ে গিয়েছে। শনিবার সকাল ৮ টার হিসাব অনুযায়ী, যমুনার জলস্তর ২০৮.৪৮ মিটারে পৌঁছেছে। এই পরিস্থিতিতে রবিবার পর্যন্ত সমস্ত স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দিল্লি সরকার। প্লাবন পরিস্থিতি সামলাতে শুক্রবার সেনার সাহায্য চেয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল। সেই মতো সেনা নেমেছে।
দিল্লির এই পরিস্থিতির জন্য হরিয়ানার বিজেপি সরকারকেই দুষছেন কেজরীওয়াল। হরিয়ানার হাথনিকুণ্ড বাঁধ থেকে ক্রমাগত জল ছাড়া হচ্ছে নদীতে। আর সেই কারণেই যমুনার জলস্তর ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়ে দিল্লি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে বলে দাবি কেজরীর।