আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পরেই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট স্পষ্ট করে দিয়েছেন, আগে তিনি আমেরিকার কথা ভাববেন, তার পরে অন্য দেশের কথা। তাঁর বিভিন্ন কূটনৈতিক নীতিতেও এই ভাবনার প্রতিফলন দেখা গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীরও বক্তব্য, তাঁর কাছেও দেশ সবার আগে। সম্প্রতি মার্কিন পডকাস্টার ফ্রিডম্যানকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন মোদী। সেখানে ট্রাম্পের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তিনি (ট্রাম্প) বিশ্বাস করেন ‘আমেরিকা প্রথম’ নীতিতে, ঠিক যেমন আমি বিশ্বাস করি ‘ভারত প্রথম’ নীতিতে।” মোদীর সঙ্গে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত স্তরে মসৃণ সম্পর্ক সর্বজনবিদিত। ফ্রিডম্যানকে মোদী জানান, একই ধরনের এই ভাবনাচিন্তার জন্যই দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে এত ভাল বনে।
গত বছর আমেরিকার নির্বাচনী প্রচারের সময়ে ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছিল। তাঁর কান ঘেঁষে বেরিয়ে গিয়েছিল গুলি। কান বেয়ে ফোটা ফোটা রক্ত ঝরার সময়েও মুষ্টিবদ্ধ হাত উঁচিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন ট্রাম্প। ওই দৃঢ় অভিব্যক্তির কথাও সাক্ষাৎকারে তুলে ধরেন মোদী। উঠে আসে ট্রাম্পের প্রথম জমানায় আমেরিকার হাউস্টনে ‘হাউডি মোদী’ অনুষ্ঠানের কথাও। সেখানে মোদীর বক্তৃতা শেষে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে স্টেডিয়াম প্রদক্ষিণ করেছিলেন ট্রাম্প। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, আমেরিকার নির্বাচনী প্রচারের সময়েও সেই একই প্রত্যয়ী ট্রাম্পকে দেখেন তিনি। মোদী বলেন, “গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরেও তিনি (ট্রাম্প) আমেরিকার প্রতি একই রকম নিবেদিত ছিলেন। দেশের জন্য নিজের জীবনকে সঁপে দিয়েছেন তিনি। তাঁর ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ ভাবনা সেটিই প্রতিফলিত করে, ঠিক যেমন আমি ‘দেশ প্রথম’ ধারণায় বিশ্বাস করি। আমার কাছে ভারত আগে এবং সেই কারণেই আমাদের মধ্যে সম্পর্ক এতটা ভাল।”
মোদীর বক্তব্য, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসাবে প্রথম দফার তুলনায় দ্বিতীয় দফায় ট্রাম্প দৃশ্যত অনেক বেশি প্রস্তুত। দ্বিতীয় বার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে ট্রাম্পকে দেখে মনে হচ্ছে, তাঁর কাছে একটি স্পষ্ট পথনির্দেশিকা রয়েছে, যেখানে প্রতিটি পদক্ষেপ সুনির্দিষ্ট। প্রতিটি পদক্ষেপ যেন কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্যই। সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে দর কষাকষির জন্য এক জন ভাল পাত্র হিসাবে ব্যাখ্যা করেছেন ট্রাম্প। তা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মোদী বলেন, “আমি দেশকে সবসময় আগে রাখি। লোকে জানে, আমি যদি কোনও বিষয়ে দর কষাকাষি করি, সে ক্ষেত্রে সবসময় দেশের গুরুত্বকেই প্রাধান্য দিই।”