নিহত শিশুর পরিবারের সঙ্গে কথা বলছেন মৌসম। —নিজস্ব চিত্র।
দিল্লিতে শ্মশানের মধ্যে ৯ বছরের এক দলিত শিশুকে ধর্ষণ করে খুন এবং তার পর জোর করে তার সৎকারের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ওই শ্মশানেরই এক পুরোহিত। এ নিয়ে গোটা দেশ যখন উত্তাল, সেই সময় নিহত শিশুটির পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেন তৃণমূলের সাংসদরা। বুধবার পুরনো নাঙ্গাল গাঁও এলাকায় শিশুটির বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন তৃণমূলের তিন সাংসদ, মৌসম বেনজির নুর, কাকলি ঘোষ দস্তিদার এবং শান্তা ছেত্রী। যদিও তার কিছু ক্ষণ আগেই মৌসম এবং শান্তাকে রাজ্যসভায় সাসপেন্ড করা হয়।
এর আগে, দিল্লির ঘটনায় সরব হয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দেশে মহিলা এবং মেয়েদের নিরাপত্তা, বিশেষ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে অমিত শাহের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে কাঠগড়ায় তুলেছিলেন তিনি। শাহের নিয়ন্ত্রণে থাকা দিল্লি পুলিশের নাকের ডগায় জোর করে মেয়েটির দেহ পুড়িয়ে যাওয়া নিয়েও কেন্দ্রকে তীব্র আক্রমণ করেন তিনি। তার পর একে একে দলের সাংসদ-নেতারা এ নিয়ে মুখ খুলতে শুরু করেন। তারই মধ্যে মৌসম-শান্তা-কাকলিরা মেয়েটির পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান। ন্যায়বিচার পেতে মেয়েটির পরিবারকে সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন তাঁরা।
দিল্লির ঘটনায় ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছে বিরোধীরা। কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধীও বুধবার মেয়েটির পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে চিঠি দিয়েছেন সিপিএম-এর পলিটব্যুরো সদস্য বৃন্দা কারাট। চিঠিতে শাহের উদ্দেশে তিনি লেখেন, ‘দিল্লি পুলিশ আপনার নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এ নিয়ে এখনও কোনও তৎপরতাই চোখে পড়েনি আপনার তরফে। মেয়েটির পরিবার যাতে সুবিচার পায়, দয়া করে সেটা অন্তত দেখুন।’
গোটা ঘটনায় দিল্লি পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। অভিযোগ পেয়ে ওই পুরোহিত এবং তাঁর সহযোগীদের গ্রেফতার না করে, মেয়েটির পরিবারকেই থানায় নিয়ে গিয়ে মারধরের অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে।
গত রবিবার শ্মশানে ঠান্ডা জলের মেশিন থেকে জল আনতে গিয়ে আর বাড়ি ফেরেনি ৯ বছরের শিশুটি। রাতে তার মা-বাবাকে ডেকে পাঠিয়ে শ্মশানের পুরোহিত জানান, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। তার পর পুলিশে খবর না দিতে দিয়ে জোর করে ওই শিশুর দেহ সৎকার করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। মেয়েটির পরিবারের অভিযোগ, ধর্ষণের পর খুন করা হয় শিশুটিকে। তার পর প্রমাণ লোপাট করতে রাতেই দেহ পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় ওই পুরোহিত-সহ চার জনকে পরে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ।