হিন্দু মহাসভার নেতা ও স্বঘোষিত ধর্মগুরু চক্রপাণি। ছবি: সংগৃহীত।
আর দেরি নয়। এ বারে চাঁদকে সনাতন হিন্দুরাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণাটা সেরে ফেলতে হবে। সে কাজ ভারতের সংসদ করে ফেলুক। রাজধানী হোক ‘শিবশক্তি পয়েন্ট’ (যে নামকরণ শনিবারই করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী)। চাঁদে গিয়ে অন্য কোনও ধর্মের লোকজন ঘাঁটি গেড়ে বসে ‘জেহাদ’ করার আগেই এ কাজ সেরে ফেলা দরকার। রবিবার এই নিদান দিয়েছেন বিজেপি-ঘনিষ্ঠ হিন্দুত্ববাদী সংগঠন হিন্দু মহাসভার নেতা ও স্বঘোষিত ধর্মগুরু চক্রপাণি। মোদী চাঁদের অংশের নাম শিবশক্তি রেখেছেন বলে তাঁর প্রশংসাও করেন হিন্দু মহাসভার নেতাটি।
কিন্তু চাঁদ তো গোটা দুনিয়ার! সে ব্যাপারটিও ভেবে রেখেছেন চক্রপাণি। তাঁর প্রস্তাব, চাঁদকে সনাতন হিন্দুরাষ্ট্র ঘোষণা করতে এবং শিবশক্তিকে তার রাজধানী করা নিয়ে প্রস্তাব আনুক রাষ্ট্রপুঞ্জ। চক্রপাণি যে হিন্দু মহাসভার নেতা, গান্ধী হত্যার মূল আসামী গডসে সেই সংগঠনেরই নেতা ছিলেন। সেই হত্যার ষড়যন্ত্রের অন্যতম অভিযুক্ত দামোদর সাভারকরও হিন্দু মহাসভারই নেতা ছিলেন।
ভারতের সফল চন্দ্রাভিযানকে বিজেপি যে নির্বাচনী প্রচারে অস্ত্র করবে, তা গোড়া থেকেই স্পষ্ট করে দেন দলের নেতা-মন্ত্রীরা। বিজ্ঞানীদের থেকেও এই সাফল্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেই বেশি কৃতিত্ব দিতে মাঠে নেমেও পড়েছে বিজেপি। তারই মধ্যে পালে হাওয়া দিতে এ বারে আসরে হিন্দু মহাসভা।
রবিবারই বিজেপির এক নেতা জানান, মোদী শুধু বিশ্বগুরু নন, তিনি মহান বিজ্ঞানীও। বিজেপির একাধিক নেতাই সফল চন্দ্রাভিযানের কৃতিত্ব মোদীকে দিতে মরিয়া। বিরোধীরা বলছেন, এর পিছনে ভোটের অঙ্ক রয়েছে। সামনেই চার রাজ্যে বিধানসভা ভোট। বছর ঘুরলেই লোকসভা। মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্বের মতো সমস্যা আমজনতার নাভিশ্বাস তুলে দিচ্ছে। তার সঙ্গে রয়েছে দুর্নীতি এবং স্বজনপোষনের অভিযোগ।
ফলে চার রাজ্যে বিধানসভা এবং আগামী বছর লোকসভা ভোটের আগে নিশ্চিন্ত থাকতে পারছে না বিজেপি ও আরএসএস। তাই তারা আসরে নামিয়েছে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলিকে। যাদের নেতারা বিজেপির কথা মেনে মোদীকে কৃতিত্ব দেওয়ার দৌড়ে নামার পাশাপাশি চাঁদকে নিয়ে হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির তাস খেলতেও মরিয়া। চক্রপাণির দাবিতে তারই প্রতিফলন।