মণিপুর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর জবাব চেয়ে সরব বিরোধীরা। —ফাইল চিত্র।
হিংসাদীর্ণ মণিপুর নিয়ে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাব এনেছে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’। সেই অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আগামী ৮ অগস্ট আলোচনা হবে সংসদে। ১০ অগস্ট জবাবি ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার এই খবর জানা গিয়েছে।
গত ৩ মে ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে অশান্তির সূত্রপাত হয় মণিপুরে। সে দিন রাত থেকেই বিভিন্ন এলাকায় জনজাতি গোষ্ঠীভুক্ত কুকিদের সঙ্গে সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেইদের সংঘর্ষ শুরু হয়। দু’সম্প্রদায়েরই বহু মহিলা নির্যাতনের শিকার হন বলে অভিযোগ। রাজ্যে হিংসার মধ্যেই দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে হাঁটানোর একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়ে যায় সমাজমাধ্যমে। যদিও ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। গত ৪ মে কঙ্গপোকপি জেলায় দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে হাঁটানো হয় বলে অভিযোগ। তাঁদের একটি মাঠে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করা হয় বলেও দাবি। ২৬ সেকেন্ডের ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে আসার পরেই দেশ জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। মণিপুরের ঘটনার নিন্দায় সরব হয় নানা মহল। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই নীরবতা ভাঙেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মণিপুর নিয়ে ৭৮ দিন মৌনী থাকার পর মোদী বলেছিলেন, ‘‘এই ঘটনা যে কোনও সভ্য সমাজের লজ্জা।’’ যদিও মণিপুর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতির দাবিতে সরব বিরোধীরা। এই নিয়ে বিজেপি বিরোধী জোট লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাব এনেছে।
লোকসভায় শাসকদল এনডিএ-র হাতে রয়েছে ৩৩১ জন সাংসদ। বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র সমর্থনে রয়েছেন ১৪৪ জন। ফলে সংখ্যার হিসাবে এই অনাস্থায় বিরোধীদের হারই হবে। অর্থাৎ, সরকার পড়বে না। তবুও অনাস্থা এনে লোকসভা নির্বাচনের আগে মোদী সরকারকে চাপে রাখতে চাইছে বিরোধীরা, এমনটাই মনে করা হচ্ছে। বিরোধীদের লক্ষ্য, মণিপুর নিয়ে যাতে সংসদে মুখ খোলেন প্রধানমন্ত্রী, সেই কৌশলেই এই অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছে।
বাদল অধিবেশনের শুরু থেকেই মণিপুর নিয়ে উত্তপ্ত সংসদ। মঙ্গলবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। শাসকদল জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-ই মণিপুর নিয়ে মুখ খুলবেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতির দাবিতে অনড় বিরোধীরা। গত শনিবার মণিপুরে দু’দিনের সফরে গিয়েছিলেন বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র ২১ জন সাংসদ। তাঁরা মণিপুরের রাজ্যপাল অনসূয়া উইককে স্মারকলিপি দিয়েছেন।