সিকিমে কপ্টারের মাধ্যমে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে ভারতীয় বায়ুসেনা। —নিজস্ব চিত্র।
ছন্দে ফিরছে সিকিম। সোমবার সপ্তাহের শুরুতে পাহাড়ের আকাশে একফোঁটা মেঘ নেই। বরং রোদ উঠেছে। আর পরিষ্কার আবহাওয়ায় জোরকদমে উদ্ধারকাজ শুরু করেছে ভারতীয় বায়ুসেনা। এত দিন আবহাওয়ার কারণেই উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছিল।
সিকিমে মেঘভাঙা বৃষ্টির বিপর্যয়ে এখনও পর্যন্ত ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে সে রাজ্যের সরকার। সোমবার সকাল ১০টা পর্যন্ত পরিসংখ্যান বলছে, সিকিমে ১০৫ জন নিখোঁজ। আহতের সংখ্যা ২৬। বিভিন্ন হাসপাতালে তাঁদের চিকিৎসা চলছে।
সিকিম সরকার জানিয়েছে, গত বুধবারের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে মোট ৮৫ হাজার ৮৭০ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে রাজ্যের অন্তত ১,৭১৬টি বাড়ি। ২,৫৬৩ জন মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠানো হয়েছে মোট ২,৭৬৪ জনকে। এই মুহূর্তে সিকিমে মোট ২৬টি ত্রাণশিবির খোলা রয়েছে। ওই ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন অন্তত ৬,৫০৫ জন মানুষ। রাজ্যের মোট ১৪টি সেতু দুর্যোগের কারণে ভেঙে পড়েছে বলে জানিয়েছে সরকার।
আবহাওয়ার উন্নতি হতেই উত্তর সিকিমের লাচেন উপত্যকায় আটকে পড়া পর্যটকদের সোমবার উদ্ধার করার কাজ শুরু হয়েছে। পূর্ব সিকিম থেকে লাচেনের দিকে সকাল থেকেই একের পর এক হেলিকপ্টার পাঠায় বায়ুসেনা। পর্যটকদের উদ্ধার করে নামিয়ে আনা হচ্ছে।
বুধবারের পর থেকে চেষ্টা করেও উদ্ধারকাজ শুরু করতে পারেননি সেনা জওয়ানেরা। কারণ লাচেন পর্যন্ত পৌঁছনোই যাচ্ছিল না। প্রায় চার হাজার পর্যটক ওই এলাকায় আটকে ছিলেন। বৃষ্টি চলছিল। দুর্যোগে ভেঙে গিয়েছিল বাড়িঘর, রাস্তাঘাট। সড়কপথে গোটা দেশের থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল উত্তর সিকিম। সোমবার রোদ ওঠায় অবশেষে উদ্ধারে নামতে পেরেছে সেনা।
রবিবারেও অবশ্য কিছু মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। অনেক প্রতিকূলতা পেরিয়ে উত্তর সিকিম থেকে সড়কপথে গ্যাংটকে নামিয়ে আনা হয়েছে পর্যটক এবং শ্রমিকদের। সোমবার আবহাওয়ার উন্নতির কারণে সেই উদ্ধারকাজ আরও গতি পেল।