বিপর্যয়: এমসে আগুন থেেক ছড়াল আতঙ্ক। শনিবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: এপি।
এমস হাসপাতালে আগুন নিয়ে সারা বিকেল-সন্ধ্যা হিমসিম খেল দিল্লি প্রশাসন। ছ’ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। গিয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ)-এর দু’টি দল। কেউ হতাহত হওয়ার খবর না থাকলেও ‘টিচিং ব্লক’-এ থাকা কিছু নমুনা ও মেডিক্যাল রিপোর্ট নষ্ট হয়েছে। আগুন লাগায় রোগী ও তাঁদের আত্মীয়স্বজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। ব্যাহত হয় হাসপাতালের জরুরি পরিষেবাও। ধোঁয়া থেকে বাঁচাতে ৩২ জন্য রোগীকে অন্যত্র সরিয়ে নিতে হয়। এই হাসপাতালেই ভর্তি রয়েছেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। এমস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তিনি যে ভবনে রয়েছেন সেটি একেবারে অন্য দিকে।
আগুন লাগে বিকেল পাঁচটা নাগাদ ‘টিচিং’ ব্লকে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় দমকলের ২২টি ইঞ্জিন। পরে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৯টিতে। সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা নাগাদ দমকলের তরফে জানানো হয়, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। কিন্তু ভুল ভাঙে মিনিট দশেক পরেই। দোতলা থেকে চারতলার আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা গেলেও পাঁচ তলায় যে আগুন তখনও রয়েছে তা বুঝতে পারেননি দমকলকর্মীরা। ফলে ফের পাঁচতলা থেকে আগুন ছড়ায় অন্য তলায়। ‘টিচিং’ ব্লকে কোনও রোগী থাকেন না। এটি মূলত পরীক্ষাগার। সেখানে একের পর এক রাসায়নিকের ড্রাম ও শীতাতপ যন্ত্রের পাইপ ফাটতে শুরু করে। কিন্তু ‘টিচিং’ ব্লকের পাশেই জরুরি বিভাগ। সেখান থেকে ও গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি বিভাগ থেকে বেশ কয়েক জন রোগীকে অন্য বিভাগে ও কয়েক জন
রোগীকে সফদরজঙ্গ হাসপাতালে সরানো হয়েছে। এঁদের কয়েক জন ছিলেন ‘লাইফ সাপোর্ট’ ব্যবস্থায়। ০১১-২৬৫৮৩৩০৮ নম্বরে ফোন করলে স্থানান্তরিত রোগীদের তথ্য মিলবে বলে জানানো হয়েছে। জরুরি বিভাগে রোগী ভর্তি আপাতত বন্ধ। এমসের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন নিজে পরিস্থিতি মোকাবিলার কাজ তদারকি করছেন। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল টুইট করেছেন, ‘‘সকলকে অনুরোধ, শান্তি বজায় রেখে দমকলকে কাজ করতে দিন।’’
আগুন লাগার কারণ এখনও স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন দিল্লির দমকল দফতরের প্রধান বিপিন কেন্টাল। তবে ‘টিচিং’ ব্লকের কাছে কোথাও শর্ট সার্কিট হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছেন দমকল আধিকারিকেরা।
‘টিচিং ব্লক’-এ নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করেন রাজেশ মাহাতো। বললেন, ‘‘আমরা কয়েক জনই প্রথম দেখতে পেয়ে কন্ট্রোল রুমে খবর দিই।’’ সাধারণত শনিবার দুপুর একটার মধ্যে ‘টিচিং ব্লক’ বন্ধ হয়ে যায়। তাই আগুন লাগার সময়ে অল্প কয়েক জন পড়ুয়া ছিলেন সেখানে। দ্রুত সবাইকে সরিয়ে নেওয়া হয়।
আগুন লাগার খবর শুনেই হাসপাতালে ছুটে আসেন মহম্মদ সোহেল। অস্ত্রোপচার বিভাগে ভর্তি রয়েছেন তাঁর কাকা। বললেন, ‘‘এসে জানলাম আগুন লেগেছে টিচিং ব্লকে।’’ এমসে চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন অনিল কুমার। বললেন, ‘‘আগুন লাগার পরে রোগীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। সেই অবস্থায় নিজের চিকিৎসা করানোর কথা ভাবতে পারিনি।’’