এই সুড়ঙ্গেই আটকে পড়েছিলেন শ্রমিকরা। (ডান দিকে) উদ্ধারকারী ওয়াকিল হাসানের বাড়ি ভাঙা হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত।
তাঁর বাড়ি ‘অবৈধ’। আর এই অভিযোগ তুলেই উত্তরাখণ্ডের সুড়ঙ্গে আটক শ্রমিকদের এক উদ্ধারকারীর বাড়ি ভেঙে দিল দিল্লি প্রশাসন। মাথার উপর ছাদ হারিয়ে সেই উদ্ধারকারীর আক্ষেপ, “৪১ জন শ্রমিককে উদ্ধারের পুরস্কার এ ভাবেই দেওয়া হল আমাকে!”
ওয়াকিল হাসান। উত্তর-পূর্ব দিল্লির হজ খাস এলাকায় বাড়ি তাঁর। বুধবার সেই এলাকায় অবৈধ নির্মাণ উচ্ছেদ অভিযানে গিয়েছিল দিল্লি ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (ডিডিএ)। সেই অভিযানে ভাঙা পড়ে হাসানের বাড়ি। ডিডিএ-র দাবি, অবৈধ ভাবে নির্মাণ হয়েছিল হজ খাসের ওই এলাকায়। আর বুধবারের অভিযানে সেই নির্মাণগুলিই ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
এক রাশ উষ্মা এবং হতাশা প্রকাশ করে হাসান বলেন, “আমি ওয়াকিল হাসান। উত্তরাখণ্ডের সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গে আটক ৪১ জন শ্রমিককে উদ্ধার করেছিলাম। কিন্তু আমার বাড়ি ভেঙে দিয়ে এ ভাবেই সেই কাজের পুরস্কার দিলেন ওঁরা।” হাসানের দাবি, তাঁদের পরিবারের সকলকে, তাঁর সন্তানদের থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আটকে রাখা হয়। এমনকি মারধরও করা হয়েছে বলে অভিযোগ হাসানের।
উত্তরাখণ্ডের সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গে আটকে পড়া ৪১ জন শ্রমিক উদ্ধারে তাঁদের ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য। সব প্রযুক্তি, প্রচেষ্টা যখন প্রায় বিফলে চলে গিয়েছিল, আশার আলো ক্ষীণ হয়ে আসছিল, শ্রমিকদের বাঁচাতে তাঁরাই এগিয়ে এসেছিলেন হাসান, মুন্না কুরেশি-সহ তাঁদের দলবল। ওঁরা ‘র্যাট হোল মাইনার্স’। তাঁদের জন্যই শেষমেশ অক্ষত অবস্থায় বেঁচে ফিরেছিলেন শ্রমিকরা। কিন্তু মাথার ঠাঁই কেড়ে নিয়ে সেই উদ্ধারের প্রতিদান এ ভাবে দেওয়া হবে, সেটা মেনে নিতে পারছেন না হাসান। তাঁর দাবি, ওই এলাকায় বসবাসকারী মানুষদের কাউকে কোনও নোটিস দেয়নি ডিডিএ। কোনও নোটিস ছাড়াই এই অভিযান চালানো হয়েছে। যদিও ডিডিএ-র পাল্টা দাবি, উচ্ছেদের নোটিস দেওয়া হয়েছিল আগেই।
আরও এক ‘র্যাট হোল মাইনার’ মুন্না কুরেশি। তিনিও উত্তরাখণ্ডে শ্রমিকদের উদ্ধারকারীদের এক জন। হাসানের মতো তাঁর কণ্ঠেও আক্ষেপের সুর শোনা গিয়েছে। তিনি বলেন, “সরকার আমাদের অনেক রকম প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু তার পরিবর্তে আমাদের দলের এক সদস্যের মাথার উপরের ছাদ কেড়ে নেওয়া হল।”