ভুয়ো ওষুধ ধরতে বিশেষ নির্দেশ ড্রাগ ইন্সপেক্টরদের। — প্রতীকী ছবি।
গাম্বিয়া, উজবেকিস্তানে ভারতীয় ওষুধ খেয়ে শিশুমৃত্যুর ঘটনার জেরে আন্তর্জাতিক ওষুধ বাজারে বড় ধাক্কা খেয়েছে ভারত। এ বার দেশের মধ্যেই ভুয়ো ওষুধের কারবার ধরতে কড়া নজরদারি চালানোর নির্দেশ পৌঁছল সব রাজ্যের ড্রাগ ইন্সপেক্টরদের কাছে। ‘ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া’ (ডিসিজিআই)-র তরফে সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, “হিমাচল প্রদেশের একটি ওষুধ সংস্থার তৈরি করা জাল ওষুধ সরবরাহ শৃঙ্খলের মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে।” তা ধরতে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
সতর্কবার্তায় উল্লেখ করা হয়েছে, অ্যান্টি অ্যালার্জিক ‘মন্টেয়ার’, হৃৎযন্ত্র সংক্রান্ত বা কার্ডিও ড্রাগ ‘অ্যাটোরভা’, বেদনানাশক ‘জ়েরোডল’, ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট এবং ভিটামিন ডি ট্যাবলেটের জাল সংস্করণ দোকানে দোকানে পৌঁছে গিয়েছে।
হিমাচলের ড্রাগস কন্ট্রোলারের থেকে পাওয়া অভিযোগের কথা উল্লেখ করে ভারতের ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল ভিজি সোমানি দেশের সমস্ত ড্রাগ ইন্সপেক্টরদের পাঠানো চিঠিতে জাল ওষুধ ধরতে নজরদারি আরও বাড়ানোর কথা বলার পাশাপাশি, উপরোক্ত ওষুধের একটি করে তালিকাও পাঠিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গাম্বিয়া ও উজ়বেকিস্তানের ঘটনার প্রেক্ষিতে ভুয়ো ওষুধ ধরতে কোমর বেঁধে নেমেছে ভারত সরকার। তারই অঙ্গ হিসাবে দেশের মধ্যেও ভুয়ো ওষুধের কারবার বন্ধ করতে চাইছে সরকার।
সমস্ত রাজ্যের ড্রাগ ইন্সপেক্টরদের পাঠানো চিঠিতে ভিজি সোমানি আরও জানিয়েছেন, বিভিন্ন নামী সংস্থার নাম ব্যবহার করে হিমাচলের সোলান জেলার বাড্ডিতে ‘ট্রাইজ়াল ফর্মুলেশনস’-এর কারখানায় মোহিত বনসল নামে এক ব্যক্তি ওই ওষুধ তৈরি করেন। যার কোনও স্বীকৃতি বা লাইসেন্স নেই। ফলে পুরোটাই ভুয়ো ওষুধ।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ভুয়ো ওষুধ আসল ওষুধের সঙ্গে মিশিয়ে ইতিমধ্যেই বাজারে ছড়িয়েও দেওয়া হয়েছে। তদন্তে প্রকাশ, উত্তরপ্রদেশের আগরা, আলিগড়ের একাধিক ওষুধের দোকানে তল্লাশি চালিয়ে ভুয়ো ওষুধের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। মনে করা হচ্ছে, ওষুধের সরবরাহ শৃঙ্খলে অত্যন্ত চালাকির সঙ্গে আসল ওষুধের সঙ্গে ভুয়ো ওষুধ মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অভিযানে যে সমস্ত ওষুধ ধরা পড়েছে তার মধ্যে রয়েছে কেজি কেজি ‘মন্টেয়ার’, ‘অ্যাটোরভা’, ‘রোজ়ডে’, ‘জ়েরোডল’, খুচরো ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট, ‘ল্যাক্টুলোজ় ইউএসপি’, ‘বায়ো ডি-থ্রি প্লাস’, ‘ডিলটিয়াজ়েম এইচসিএল’, ‘ডায়াটর’ ট্যাবলেট। এই ওষুধগুলো আদতে তৈরি করে ‘সিপলা’, ‘জ়াইডাস হেল্থকেয়ার’, ‘আইপিসিএ ল্যাবস’, ‘ম্যাকলেয়ডস ফার্মা’, ‘টরেন্ট ফার্মাসিউটিক্যালসে’র মতো নামী ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা। সোমানি চিঠিতে লিখেছেন, ‘‘আপনাদের কাছে অনুরোধ, এই ভুয়ো ওষুধগুলো যেন আপনাদের এলাকায় ছড়িয়ে না পড়ে তা নিশ্চিত করুন।’’
সব মিলিয়ে বিদেশের পাশাপাশি দেশের বাজারেও ভুয়ো ওষুধ খুঁজতে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে ‘ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া’।