শুক্রবার সকাল থেকে চাঁদনিকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে স্থানীয় পুলিশের কাছে খবর দেন গ্রামের বাসিন্দারা। প্রতীকী ছবি।
কন্যাকে খুন করার অভিযোগে গ্রেফতার হলেন উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজ জেলার বাসিন্দা লাল্লান আলি। কমবয়সি যুবকের সঙ্গে প্রেম করছে জানতে পেরে কন্যা চাঁদনির সঙ্গে অশান্তি শুরু হয় লাল্লানের। রাগের মাথায় হাতের কাছে থাকা ইলেকট্রিক হিটার দিয়ে তিনি আঘাত করেন চাঁদনিকে। তার পর গলা টিপে শ্বাসরোধ করেন খুন করেন বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজ জেলার হিন্দপুর গ্রামের কাছে কারছানা এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ সূত্রে খবর, লাল্লানের বয়স ৫৮ বছর।
এই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানিয়েছে, ১৯ বছর বয়সি চাঁদনিকে খুন করার পর তাঁর দেহ গ্রামের কবরখানায় নিয়ে গিয়ে নিজেই পুঁতে দেন লাল্লান। শুক্রবার সকাল থেকে চাঁদনিকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে স্থানীয় পুলিশের কাছে খবর দেন গ্রামের বাসিন্দারা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। খোঁজ করার পর গ্রামের কবরখানা থেকে চাঁদনির মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানোর পর রিপোর্টে জানা যায় যে, গলা টিপে খুন করার ফলে মৃত্যু হয়েছে চাঁদনির।
জিজ্ঞাসাবাদ করার পর পুলিশ জানতে পারে যে, চাঁদনি এক যুবকের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। যুবকটি মির্জ়াপুরের বাসিন্দা। সমাজমাধ্যমেই আলাপ হয় দু’জনের। বন্ধুত্ব থেকে প্রেমের সম্পর্কে গড়াতে বেশি সময় লাগেনি।
২৫ ফেব্রুয়ারি চাঁদনি তাঁর প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে মুম্বই চলে যান। পুলিশ সূত্রে খবর, চাঁদনির সঙ্গে মুম্বই গিয়েছিলেন তাঁর ছোট বোনও। কিন্তু মুম্বইয়ে কিছু দিন থাকার পর তাঁদের টাকাপয়সা ফুরিয়ে যায়। কোনও উপায় না পেয়ে চাঁদনি তাঁর সৎভাইকে ফোন করে নিজেদের সমস্যার কথা জানান। মুম্বইয়ের হাজি আলি দরগার সামনে ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করবেন বলে সিদ্ধান্ত নেন চাঁদনি। তার পর ভাইয়ের সঙ্গেই নিজের বাড়িতে ফিরে আসেন তিনি। কিন্তু বাড়ি ফিরে আসার পরেও তাঁদের সম্পর্কে ছেদ পড়েনি। ফোনে তাঁর প্রেমিকের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছিলেন চাঁদনি।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাতেই চাঁদনির ফোনের বার্তালাপ শুনতে পান লাল্লান। পুলিশ সূত্রে খবর, কমবয়সি যুবকের সঙ্গে সম্পর্কে রয়েছেন জেনে চাঁদনির সঙ্গে অশান্তি শুরু হয় লাল্লানের। রাগের মাথায় তিনি চাঁদনিকে ইলেকট্রিক হিটার দিয়ে আঘাত করেন বলে অভিযোগ। তার পর গলা টিপে নিজের কন্যাকে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলেন লাল্লান।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে যে, লাল্লানের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর সন্তান ছিলেন চাঁদনি। প্রথম পক্ষের দুই পুত্রসন্তান রয়েছে তাঁর। কয়েক বছর আগে প্রথম পক্ষের স্ত্রী মারা যাওয়ার পর আবার বিয়ে করেন তিনি। সেই পক্ষের দুই কন্যাসন্তান রয়েছে লাল্লানের। সোমবার লাল্লানকে গ্রেফতার করে তাঁর বিরুদ্ধে খুন এবং খুনের প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন পুলিশ আধিকারিকেরা।