অভিনয়ে কোনও দিনই নামতে চাইতেন না টিউলিপ জোশী। কিন্তু ভাগ্যের জেরে যশরাজ ফিল্মসের মতো প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়ে কেরিয়ারের প্রথম ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। গুটিকতক হিন্দি ছবিতে অভিনয় করার পর বলিপাড়া থেকে সরে যান টিউলিপ। তবে, এখন অনেক বলি নায়িকার থেকে বেশি উপার্জন করেন তিনি।
১৯৭৯ সালের ১১ সেপ্টেম্বর মুম্বইয়ে জন্ম টিউলিপের। মুম্বইয়েই স্কুল এবং কলেজের পড়াশোনা শেষ করেন তিনি। অভিনয়ে আসার ইচ্ছা ছিল না টিউলিপের। তবে, মডেলিংয়ের প্রতি আগ্রহ ছিল।
২০০০ সালে এক সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলেন টিউলিপ। কিন্তু সেই প্রতিযোগিতায় জিততে পারেননি। কিন্তু এর পরই টিউলিপের কাছে মডেলিং এবং ধারাবাহিকে অভিনয় করার বহু প্রস্তাব আসতে থাকে।
খেলাধূলার প্রতি বরাবর আগ্রহ ছিল টিউলিপের। সে দিকেই নিজের কেরিয়ার গড়তে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ভাগ্যের ফেরে অভিনয় শুরু করেন তিনি।
প্রযোজক আদিত্য চোপড়ার প্রাক্তন স্ত্রী পায়েল খন্নার বান্ধবী ছিলেন টিউলিপ। আদিত্য এবং পায়েলের বিয়ের অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন টিউলিপ। অনুষ্ঠানেই আদিত্যের নজরে পড়েন তিনি।
আদিত্য চেয়েছিলেন যে, টিউলিপ তাঁর ছবিতে নায়িকা হিসাবে কাজ করুন। ২০০২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত যশরাজ ফিল্মসের প্রযোজনায় ‘মেরে ইয়ার কি শাদি হ্যায়’ ছবিতে অভিনয় করেন টিউলিপ। এই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন বিপাশা বসু, জিমি শেরগিল, উদয় চোপড়া। কিন্তু ছবিটি বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে।
আদিত্য চোপড়ার সঙ্গে কেরিয়ারের প্রথম ছবিতে অভিনয়ের জন্য নিজের নাম পর্যন্ত পরিবর্তন করেছিলেন টিউলিপ। সঞ্জনা নাম ব্যবহার করেছিলেন তিনি। কিন্তু পরে তিনি ভাবলেন যে, অন্য নাম নিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের পরিচয় তৈরি করবেন না তিনি। তাই নিজের নামেই আবার কাজ করতে শুরু করেন টিউলিপ।
হিন্দিতে ঠিক মতো কথা বলতে পারতেন না টিউলিপ। পরে অবশ্য অভিনয়ের খাতিরে হিন্দির পাশাপাশি পঞ্জাবি, তামিল এবং তেলুগু ভাষা শিখেছিলেন তিনি।
‘মাতৃভূমি: এ নেশন উইদাউট উওমেন’, ‘ধোঁকা’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন টিউলিপ। হিন্দি ধারাবাহিকেও অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। বলিউড ফিল্ম জগতের বাইরে দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রি তথা তামিল, তেলুগু, কন্নড় এবং মালয়ালম ভাষার ছবিতেও কাজ করেছিলেন টিউলিপ। কিন্তু কোনও ক্ষেত্রেই সে ভাবে পরিচিতি পাননি তিনি।
এর পরই অভিনয় জগত থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন টিউলিপ। অভিনয় ছেড়ে সন্ন্যাস গ্রহণ করেন তিনি। লেখালিখিও শুরু করেন টিউলিপ।
এই সময় সেনাবাহিনীতে কর্মরত ক্যাপ্টেন বিনোদ নায়ারের সঙ্গে সম্পর্কে আসেন টিউলিপ। বিনোদের সঙ্গেই সাতপাকে বাঁধা পড়েন তিনি।
বিয়ের পর বিনোদ এবং টিউলিপ দু’জন মিলে একটি কনসালটেন্সি এজেন্সি খোলেন। বর্তমানে টিউলিপ সেই সংস্থার অধিকর্তা পদে রয়েছেন। প্রতি মাসে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করেন তিনি। উপার্জনের নিরিখে বলিপাড়ার নামকরা অভিনেত্রীদের টক্কর দেন টিউলিপ।
ন’বছর আগে শেষ বারের মতো হিন্দি ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায় টিউলিপকে। ২০১৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সলমন খান অভিনীত ‘জয় হো’ ছবিতে ক্যামিয়ো চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন টিউলিপ।
‘জয় হো’র পর আর হিন্দি ছবিতে কাজ করেননি টিউলিপ। বরং ‘এয়ারলাইন্স’ নামের একটি হিন্দি ধারাবাহিকে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন টিউলিপ।
নিজের নামে একটি ওয়েবসাইটও খুলে রেখেছেন টিউলিপ। সেই ওয়েবসাইটে নিজের পরিচয় এক জন অভিনেত্রী এবং বৈদিক শাস্ত্র বিশেষজ্ঞ হিসাবে দেন তিনি। ইনস্টাগ্রামে তাঁর অনুরাগীর সংখ্যা ২১ হাজারের গণ্ডি পেরিয়েছে।