তরুণীকে মায়ের নাম বদলের অনুমতি দিয়েছে দিল্লি হাই কোর্ট। —প্রতীকী চিত্র।
নিজের জন্মদাত্রী মায়ের পরিচয় গ্রহণ যে কোনও কন্যার জন্মগত অধিকার। একটি মামলায় এমনটাই মন্তব্য করল দিল্লি হাই কোর্ট। মামলাকারী তরুণীকে মায়ের পরিচয় বদলের অনুমতি দিয়েছে আদালত। ওই তরুণী নিজের যাবতীয় নথি থেকে সৎমায়ের পরিচয় সরিয়ে জন্মদাত্রী মায়ের নাম যোগ করতে পারবেন।
দিল্লির বাসিন্দা শ্বেতা আদালতে জানিয়েছেন, সিবিএসই বোর্ডের অধীনে তিনি যখন দশম শ্রেণির চূড়ান্ত পরীক্ষা দেন, সেই সময়ে রেজিস্ট্রেশনের নথিতে মায়ের নামের জায়গায় তাঁর সৎমায়ের নাম লেখা হয়েছিল। ওই সময়ে তিনি বাবা এবং সৎমায়ের সঙ্গেই থাকছিলেন। তাঁর বাবা এবং মায়ের বিবাহবিচ্ছেদের পর সাময়িক ভাবে বাবার কাছে থাকার বন্দোবস্ত হয়েছিল। এখন তিনি মায়ের কাছেই থাকেন। তাই চান, তাঁর বোর্ডের পরীক্ষার নথিতেও মা হিসাবে জন্মদাত্রীর নামই রাখা হোক।
তরুণী জানিয়েছেন, এই মর্মে তিনি সিবিএসই বোর্ড কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু সেখান থেকে জানানো হয়েছে, বাবা বা মায়ের নাম পরীক্ষার নথিতে পরিবর্তনের কোনও বন্দোবস্ত নেই। এর পরেই তরুণী আদালতের দ্বারস্থ হন। এ প্রসঙ্গে দিল্লি হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, যে কোনও ব্যক্তির তাঁর জন্মদাতা বাবা অথবা জন্মদাত্রী মায়ের পরিচয়ে পরিচিত হওয়ার অধিকার রয়েছে। এটি তাঁর মৌলিক অধিকার। এই অধিকার থেকে তাঁকে বঞ্চিত করা যায় না।
আদালত আরও জানিয়েছে, যে কোনও ব্যক্তির ভবিষ্যতের জন্য পরীক্ষার নথি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সারা জীবন সিবিএসই পরীক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ শংসাপত্রে তাঁর মা হিসাবে এমন এক জনের নাম থাকবে, যিনি তাঁকে জন্ম দেননি— তরুণী এটি মেনে নিতে পারছেন না। এই ঘটনা তাঁর মনের উপরে প্রভাব ফেলছে। একে শুধু আইনি লড়াই নয়, ব্যক্তিগত লড়াই বলেও মন্তব্য করেছে আদালত।
আদালত আরও জানায়, এ ক্ষেত্রে তরুণীর আবেদন খারিজ করে দেওয়া সঠিক হবে না। অনেকের কাছে এটি তুচ্ছ ঘটনা বলে মনে হতে পারে। কিন্তু মামলাকারীর কাছে এটি এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে, একটি নামের ফারাক তাঁর জীবন বদলে দিতে পারে। তরুণীর আবেদন মঞ্জুর করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে সিবিএসইকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।