প্রতীকী ছবি।
সুটকেসে ভরা পচাগলা দেহাংশগুলি জড়ানো ছিল একটি সোয়েটারে। যে দোকান থেকে সোয়েটারটি বানানো তার নাম লেখা ছিল পিঠে লাগানো ট্যাগে। সেই সূত্র ধরেই হত্যা-রহস্যের জাল ছাড়াল মুম্বই পুলিশের অপরাধ দমন শাখা। তদন্তে উঠে এল, গত ২৭ নভেম্বর বেনেট রিবেলো নামে ৫৯ বছরের এক গিটার বাদককে মুম্বইয়ের দ্বারকা কুঞ্জে তাঁর নিজের বাড়িতেই খুন করে দত্তক কন্যা ১৯ বছরের আরাধ্যা পাটিল ও তার প্রেমিক। তার পরে দেহটি ছোট ছোট টুকরো করে সুটকেসে ভরে ভাসিয়ে দেয় নদীতে। মাহিম সৈকত থেকে উদ্ধার হয় সেই সুটকেসটি।
তদন্তে জানা গিয়েছে, বেনেটকে প্রথমে বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে ও ছুরি গিয়ে কুপিয়ে মারে আরাধ্যা ও তার ১৬ বছর বয়সী প্রেমিক। এর পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে মুখে মশা মারার ওষুধ স্প্রে করে দেয়। বেনেট মারা যাওয়ার পরে তাঁর দেহটি ছুরি গিয়ে টুকরো করে অভিযুক্তেরা। ওই অবস্থায় দেহ তিন দিন ফ্ল্যাটেই ছিল। সেই তিন দিন অভিযুক্তরাও ওই ফ্ল্যাটে ছিল। পরে দেহের টুকরোগুলি তিনটি সুটকেসে ভরে মিঠি নদীতে ভাসিয়ে দেয়।
পুলিশ জানিয়েছে, দেহাংশগুলি জড়িয়ে রাখা সোয়েটারটিই ছিল তাঁদের হাতে থাকা একমাত্র সূত্র। সোয়েটারে লাগানো ট্যাগ থেকে জানা যায়, সেটি কুরলা এলাকার একটি দোকান থেকে বানানো। সেই দোকানে গিয়ে দর্জির সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পারে, সোয়েটারটি বানিয়েছিলেন বেনেট রিবেলো নামে এক ব্যক্তি। এর পরে পুলিশ সোশ্যাল মিডিয়ায় খোঁজ শুরু করে বেনেটের। ফেসবুকে ওই নামের প্রোফাইলগুলি খুঁজতে থাকে তারা। একটি প্রোফাইলে দেখা যায়, একই সোয়েটার পরা বেনেটের ছবি। সেখান থেকে তাঁর ভিজিটিং কার্ডের ছবিও পাওয়া যায়। সেই সূত্র ধরে দ্বারকা কুঞ্জের বাড়িতে হাজির হয় পুলিশ। জানতে পারে, বেনেট একটি কন্যাসন্তান দত্তক নিয়েছিলেন। তার পরেই আরাধ্যা ওরফে রিয়া ও তার প্রেমিককে আটক করে জেরা শুরু করে। জেরায় দুই অভিযুক্ত দোষ স্বীকার করে। আরাধ্যা জানায়, বেনেট তাকে যৌন হেনস্থা করতেন। তাদের সম্পর্ক নিয়েও আপত্তি ছিল বেনেটের। সেই ক্ষোভ থেকেই প্রেমিকের সঙ্গে মিলে বাবাকে খুন করে সে।