পুলিশকর্মীদের নির্দেশ দেওয়ার সেই দৃশ্য। ছবি সৌজন্য টুইটার।
কোনও ছাড় নয়। নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে এগোনোর চেষ্টা করলেই যেন মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। হরিয়ানার কারনালে আন্দোলনকারী কৃষকদের উপর লাঠিচার্জ করার আগে মহকুমা শাসকের একটি ভিডিয়ো ঘিরে তোলপাড় রাজ্য থেকে জাতীয় রাজনীতি।
নেটমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া সেই ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, এক দল পুলিশকর্মী দাঁড়িয়ে রয়েছেন এবং তাঁদের কিছু নির্দেশ দিচ্ছেন কারনালের মহকুমা শাসক আয়ুষ সিনহা। তাঁকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘আপনাদের কাছে একটা বিষয় স্পষ্ট করে দিতে চাই। যাঁরা নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে এগোনোর চেষ্টা করবেন, তিনি যে-ই হন না কেন, যেখানকারই হন না কেন, তাঁদের কোনও ভাবেই ছাড় দেওয়া যাবে না।’ এর পরই হুঁশিয়ারির সুরে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘কোনও নির্দেশের অপেক্ষা করার দরকার নেই। এমন পরিস্থিতি এলে হাতে লাঠি তুলবেন এবং সজোরে আঘাত করবেন। যদি কোনও আন্দোলনকারী নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে বেরিয়েও আসেন, আমি যেন দেখতে পাই তাঁর মাথা রক্তাক্ত।’
সামনে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশকর্মীদের উদ্দেশে এর পরই কড়া সুরে মহকুমা শাসককে বলতে শোনা যায়, ‘এ নির্দেশের বিষয়ে আর কোনও সন্দেহ আছে?’ পুলিশকর্মীরা সমস্বরে বলেন, ‘না স্যর।’ সেই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই সমালোচনার মুখে হরিনায়া সরকার। বিজেপি সাংসদ বরুণ গাঁধীও এই ঘটনার নিন্দা করেছেন। বরুণ সেই ভিডিয়ো টুইটারে শেয়ার করে বলেন, ‘মনে হয় এই ভিডিয়োটি এডিট করে ছাড়া হয়েছে। তবে যদি সত্যিই এমন হয়ে থাকে, তা হলে ভারতের মতো গণতান্ত্রিক দেশে নাগরিকদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ অত্যন্ত নিন্দনীয়।’
কৃষকদের উপর লাঠিচার্জের নিন্দা করেছেন শীর্ষ কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা। তাঁর কথায়, “আপনি হরিয়ানভিদের হৃদয়ে আঘাত করেছেন খট্টর সাহাব। কৃষকদের এই রক্ত বৃথা যাবে না। নতুন প্রজন্ম আপনাকে তার উত্তর দেবে।”
শনিবার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর এবং রাজ্য বিজেপি-র প্রধান ওমপ্রকাশ ধনখড়-সহ দলের শীর্ষ নেতাদের একটি বৈঠক ছিল কারনালে। কৃষকরা রাজ্যের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন। এর পর মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকস্থলের উদ্দেশে রওনা হতেই কৃষকদের আটকে দেয় পুলিশ। দু’পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয় এবং পরিস্থিতি ক্রমে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এই ঘটনায় ১০ জন কৃষক আহত হয়েছেন।