পথ আগলে বৃন্দা। ছবি: টুইটার।
মঙ্গলবার শীর্ষ আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও পেলোডার দিয়ে দিল্লির জহাঙ্গিরপুরীতে ‘বেআইনি নির্মাণ’ ভাঙা শুরু করেছিল উত্তর দিল্লি পুরসভা বা এনডিএমসি। পুরসভার ওই সিদ্ধান্তে আগেই স্থগিতাদেশ জারি করেছিল শীর্ষ আদালত। তাই আদালতের সেই স্থগিতাদেশের কপি হাতে নিয়ে পেলোডার আটকে দাঁড়ালেন সিপিএম নেত্রী বৃন্দা কারাট। এ ভাবে ঘণ্টা দুয়েক চলল টানাপড়েন। অবশেষে থামল উচ্ছেদ অভিযান।
গত শনিবার হনুমান জয়ন্তীর দিন দিল্লির জহাঙ্গিরপুরীতে হিংসার ঘটনা ঘটে। তাতে কয়েক জন সাধারণ মানুষ ছাড়াও একাধিক পুলিশ কর্মী আহত হন। ঘটনাক্রমে দিল্লি বিজেপির সভাপতি আদেশ গুপ্তা হুঁশিয়ারি দেন, জহাঙ্গিরপুরী মসজিদের পাশাপাশি থাকা সব ‘বেআইনি নির্মাণ’ বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে। একই ঘোষণা আসে এনডিএমসি-র তরফেও। এর পর মঙ্গলবার সকালে ১০টা নাগাদ উত্তর দিল্লি পুরসভা থেকে ন’টি বুলডোজার পাঠানো হয় ওই জায়গায়। প্রায় ৪০০ পুলিশ কর্মী মোতায়েন করা হয় আইন শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য। ঘটনাস্থলের ‘অবৈধ’ দোকানপাট ভাঙচুরের সময়ই সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশের কপি নিয়ে পৌঁছন এক মামলাকারী। তাঁদের দাবি, একটি সম্প্রদায়কে উদ্দেশ্য করে এমন অভিযান চালানো হচ্ছে। অভিযোগ, এই ভাঙচুর অভিযান নিয়ে আগে থেকে দোকান মালিকদের কিছুই জানায়নি পুরসভা।
পুরসভার এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন বৃন্দা। যার প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি এনভি রমণার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চ পুরসভার সিদ্ধান্তের উপর স্থগিতাদেশ দেয়। কিন্তু তাদের কাছে আদালতের কপি এসে পৌঁছয়নি, এই দাবি করে ভাঙচুর অভিযান চালু রাখে পুরসভা। দুপুর ১২টা নাগাদ ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান বৃন্দা। হাতে আদালতের কপি নিয়ে পেলোডোরের সামনে দাঁড়িয়ে পড়েন তিনি। পিছনে দেখা যায় কর্মী সমর্থকদের। নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিয়োয় দেখা যায়, পুলিশ এবং পুরসভা কর্মীদের দিকে হাত নেড়ে থামতে বলছেন সিপিএম নেত্রী। অন্য হাতে তুলে ধরা আদালতের স্থগিতাদেশের কাগজ।
যদিও এর পরেও চলে টানাপড়েন। এর মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে বৃন্দার আইনজীবী দাবি করেন, আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও অভিযান থামায়নি পুরসভা। প্রধান বিচারপতি আদালতের কর্মীকে নির্দেশ দেন এনডিএমসি-র মেয়র এবং দিল্লি পুলিশ কমিশনারকে ফোন করে উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ করার কথা বলতে। অবশেষে প্রায় দু’ঘণ্টা পর বন্ধ হয় এই অভিযান। জহাঙ্গিরপুরীর মানুষের কাছে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার আবেদন করেন বৃন্দা। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী নির্দেশ পর্যন্ত সবাইকে অপেক্ষা করার বার্তা দেন তিনি।