ফাইল চিত্র।
চিনের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি)-র শতবর্ষ উপলক্ষে দিল্লির চিনা দূতাবাস ভার্চুয়াল আলোচনাসভার আয়োজন করেছিল। তাতে যোগ দিয়ে মোদী সরকার তথা বিজেপির প্রশ্নের মুখে পড়লেন এ দেশের বাম নেতারা। কমিউনিস্টদের বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য রয়েছে অভিযোগ তুলে বিজেপির যুক্তি, নিয়ন্ত্রণরেখায় যখন দু’দেশের মধ্যে টানাপড়েন চলছে, তখন বাম নেতাদের এ বিষয়ে আরও সতর্ক থাকা দরকার। পাল্টা জবাবে সিপিএম, সিপিআই নেতারা বলছেন, মোদী সরকার কি নিজে চিনের সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছে? সমস্ত বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছেদ করে দিয়েছে? না কি চিনের কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে এ দেশের রাজনৈতিক দলের কথা বলা নিষিদ্ধ করে দিয়েছে? বামেদের অভিযোগ, মোদী সরকার আসলে পেগাসাস, পেট্রল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি, বেকারির মতো বিষয় থেকে নজর ঘোরাতে এই সব প্রশ্ন তুলছে।
গত ৬ জুলাই চিনের কমিউনিস্ট পার্টির শতবর্ষের অনুষ্ঠানে বাম নেতারা অনলাইনে শ্রোতা হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। গত মঙ্গলবার চিনের দূতাবাস ‘দল গঠন নিয়ে অভিজ্ঞতা বিনিময়, সহযোগিতা’ বিষয়ে একটি অনলাইন সেমিনারের আয়োজন করে। তাতে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, সিপিআইয়ের ডি রাজা, ফরওয়ার্ড ব্লকের জি দেবরাজন যোগ দেন। ডিএমকে সাংসদ এস সেন্থিল কুমারও যোগ দেন। সূত্রের খবর, বৈঠকে ইয়েচুরি, রাজা, দু’জনেই বলেন, সীমান্তের বিবাদ পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমেই মেটানো উচিত। দেবরাজন তাতে যোগ করেন, এখনও পর্যন্ত সামরিক, কূটনৈতিক স্তরেই আলোচনা হচ্ছে। রাজনৈতিক স্তরেও আলোচনা হওয়া দরকার। সেমিনারের শেষে চিনের রাষ্ট্রদূত সু উইডং বলেন, রাজনৈতিক দলের মধ্যে সম্পর্ক উন্নত হলে বিবাদ মিটতেও সুবিধা হবে।
মোদী সরকারের বিদেশ প্রতিমন্ত্রী ভি মুরলীধরনের অভিযোগ, বাম নেতাদের সতর্ক থাকতে হবে। রাষ্ট্রের স্বার্থই সর্বোচ্চ হওয়া দরকার। বিজেপি সূত্রের বক্তব্য, চিনের কমিউনিস্ট পার্টির তরফে তাঁদের কাছেও বিভিন্ন শতবার্ষিকী অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ ছিল। কিন্তু তাঁরা যোগ দেননি। কংগ্রেসও যোগ দেয়নি। বাম নেতারা কেন যোগ দিলেন?
মুরলীধরনের বক্তব্য, ‘‘কমিউনিস্টদের আসলে বিদেশের প্রতি আনুগত্য রয়েছে।’’ সিপিআই নেতা পল্লব সেনগুপ্তর পাল্টা দাবি, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আগে স্পষ্ট করে বলুন যে, চিন ভারতের জমি দখল করে রেখেছে। আমরা গলওয়ানে সংঘর্ষের পরেই বলেছি, দু’পক্ষই নিজেদের পুরনো অবস্থানে সরে যাক। সীমান্ত বিবাদ সত্ত্বেও তো বাণিজ্যিক লেনদেন, কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রয়েছে।’’ দেবরাজনের যুক্তি, ‘‘বিজেপি, মোদী সরকার তো চিনের কমিউনিস্ট পার্টিকে শতবর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছে। এর সঙ্গে সীমান্ত বিবাদের কোনও সম্পর্ক নেই। তা হলে আমরা কেন যোগ দিতে পারব না?’’