—প্রতীকী চিত্র।
করোনা মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক মহলের নজর কেড়েছে ভারত। অতিমারি পরিস্থিতিতে প্রতিষেধকের জন্যও ভারত ক্রমশ গোটা বিশ্বের ভরসা হয়ে উঠছ। ভারত, আমেরিকা, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়া, ৪ দেশের রাষ্ট্রনেতাদের নিয়ে বুধবার প্রথম চতুর্দেশীয় বৈঠক হতে চলেছে। সেখানে ভারতের জন্য বিশেষ আর্থিক প্যাকেজ বরাদ্দ করা হতে পারে বলে হোয়াইট হাউসের একটি সূত্র জানিয়েছে। বলা হয়েছে, দেশের অন্দরে কোভিড মোকাবিলা, টিকাকরণের পাশাপাশি পড়শি দেশগুলিতে প্রতিষেধক পাঠানো, সব কিছুতে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে কাজ করেছে ভারত। তাই কোভিড প্রতিষেধক তৈরিতে ভারতকে গোটা বিশ্বের আঁতুড়ঘর করে তোলার চিন্তাভাবনা চলছে, যাতে দ্রুত গতিতে দক্ষিণ এশিয়া-সহ গোটা বিশ্বে সেখানে তৈরি প্রতিষেধক দ্রুত সরবরাহ করা যায়।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং ব্রিডিশ সুইডিশ সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকার ফর্মুলা নিয়ে ইতিমধ্যেই করোনা প্রতিষেধক কোভিশিল্ড তৈরি করে ফেলেছে ভারত। আবার ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) এবং হায়দরাবাদের ভারত বায়োটেক মিলে সম্পূর্ণ দেশীয় প্রতিষেধক কোভ্যাক্সিন তৈরি করেছে। সেগুলি ব্যবহার করে টিকাকরণও শুরু হয়ে গিয়েছে দেশ জুড়ে। তার মধ্যেই তৃতীয় প্রতিষেধক হাতে পাওয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। স্পুটনিক ভি প্রতিষেধকটি ভারতে তৈরি নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে শেষ মুহূর্তের আলোচনা চলছে। বুধবারের বৈঠকে আমেরিকান সংস্থা নোভাভ্যাক্স আইএনসি, জনসন অ্যান্ড জনসনের মতো সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে প্রতিষেধক তৈরির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা।
আমেরিকার শীর্ষস্থানীয় এক আধিকারিক সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘‘প্রতিষেধক তৈরিতে যাবতীয় বাধাবিপত্তি কাটিয়ে দ্রুতগতিতে টিকাকরণের কাজ শুরু করা এবং ভাইরাসটির চরিত্রবদল প্রতিহত করাই আমাদের লক্ষ্য। যত তাড়াতাড়ি টিকাকরণ শুরু করা যাবে, তত তাড়াতাড়ি চরিত্র বদল রোখা যাবে। এতে অতিমারির বিরুদ্ধে আমাদের হাত শক্ত হবে।’’ দক্ষিণ এশিয়া-সহ গোটা বিশ্বের ভারত থেকে প্রতিষেধক পৌঁছে দেওয়াই লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন তিনি।
ভারত মহাসাগরে চিনা আগ্রাসন প্রতিহত করতে এত দিন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে দেখা গিয়েছে ভারত, আমেরিকা, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়াকে। শক্তি প্রদর্শনে একসঙ্গে মহড়াও দিয়েছে ৪ দেশের সেনা। এ বার ‘প্রতিষেধক কূটনীতি’-তেও একজোট হয়ে চিনকে মাত দেওয়ার প্রচেষ্টা চলছে। জানুয়ারি মাসে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব হাতে নেওয়ার পর এই প্রথম চতুর্দেশীয় বৈঠকে শামিল হতে চলেছেন আমেরিকার ৪৬তম প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। প্রতিষেধক ছাড়াও, জলবায়ু পরিবর্তন, অর্থনৈতিক সহযোগিতা নিয়ে সবিস্তার আলোচনা হওয়ার কথা বৈঠকে।