গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪ হাজার ৫১৬ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যাটা নিয়মিত ভাবে বেড়েই চলেছে। শনিবারও তার অন্যথা হল না। এই বৃদ্ধির জেরে মোট আক্রান্তের সংখ্যা চার লক্ষ ছুঁইছুঁই। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪ হাজার ৫১৬ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। দেশে এক দিনে এত মানুষ এর আগে সংক্রমিত হননি। এই বৃদ্ধির জেরে দেশে মোট কোভিডে আক্রান্ত হলেন তিন লক্ষ ৯৫ হাজার ৪৮ জন। এর মধ্যে মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, দিল্লি ও গুজরাত— এই চারটি রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা আড়াই লক্ষের বেশি।
আক্রান্তের পাশাপাশি মৃত্যুর সংখ্যাও উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার থাবায় দেশে মৃত্যু হয়েছে ৩৭৫ জনের। এ নিয়ে দেশে মোট মৃত্যু হল ১২ হাজার ৯৪৮ জনের। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মৃত্যু হয়েছে পাঁচ হাজার ৮৯৩ জনের। ধারাবাহিক ভাবে বেড়ে রাজধানী দিল্লির মোট মৃত্যুর সংখ্যা দু’হাজার ছাড়াল। করোনার প্রভাবে সেখানে মোট দু’হাজার ৩৫ জনের মৃত্যু হল। তৃতীয় স্থানে থাকা গুজরাতে মারা গিয়েছেন এক হাজার ৬১৮ জন। এর পর তালিকায় রয়েছে তামিলনাড়ু (৬৬৬), পশ্চিমবঙ্গ (৫২৯), মধ্যপ্রদেশ (৪৯৫), উত্তরপ্রদেশ (৪৮৮), রাজস্থান (৩৩৩), তেলঙ্গানা (১৯৮) ও হরিয়ানা (১৪৪) ও কর্নাটক (১২৪)।
দেশে আক্রান্তের শীর্ষে সেই মহারাষ্ট্র। গত ২৪ ঘণ্টায় তিন হাজার ৮২৭ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন সেখানে। সে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন এক লক্ষ ২৪ হাজার ৩৩১ জন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা তামিলনাড়ুতে আক্রান্তের সংখ্যা ৫৪ হাজার ৪৪৯ জন। তৃতীয় স্থানে থাকা দিল্লিতে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৫৩ হাজার ১১৬ জন। ২৬ হাজার ১৪১ জন আক্রান্ত নিয়ে চতুর্থ স্থানে রয়েছে গুজরাত।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, পশ্চিমবঙ্গ ও মধ্যপ্রদেশ ১০ হাজারের গণ্ডি পার করে এগিয়ে চলেছে। উত্তরপ্রদেশ (১৫,৭৮৫), রাজস্থান (১৪,১৫৬), পশ্চিমবঙ্গ (১৩,০৯০) ও মধ্যপ্রদেশে (১১,৫৮২) জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে হরিয়ানা (৯,৭৪৩), কর্নাটক (৮,২৮১), অন্ধ্রপ্রদেশ (৭,৯৬১), বিহার (৭,১৮১), তেলঙ্গানা (৬,৫২৬) ও জম্মু ও কাশ্মীর (৫,৬৮০)। সংক্রমিতের সংখ্যা পাঁচ হাজারের নীচে রয়েছে অসম (৪,৯০৪), ওড়িশা (৪,৬৭৭), পঞ্জাব (৩,৮৩২), কেরল (২,৯১২), উত্তরাখণ্ড (২,১৭৭), ছত্তীসগঢ় (২,০২৮), ঝাড়খণ্ড (১,৯৬৫) ও ত্রিপুরা (১,১৭৮)-র মতো রাজ্যগুলির।
পশ্চিমবঙ্গে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ হাজার ছাড়াল। রাজ্যে নিয়মিত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৫৫ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। এ নিয়ে রাজ্যে মোট মৃত্যু হল ৫২৯ জনের।
করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি, আক্রান্তদের সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যাটাও উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়ছে। দেশে অ্যাক্টিভ রোগীর থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যাটা এখন বেশি। কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর এখনও অবধি দেশে দু’লক্ষ ১৩ হাজার ৮৩১ জন সুস্থ হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ন’হাজার ১২০ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)