ছবি: পিটিআই।
দেশে করোনায় মৃত্যু পাঁচশো ছাড়াল। লকডাউন-পর্ব চল্লিশ দিনেই শেষ হবে কি না, তার কোনও স্পষ্ট উত্তর এখনও স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কাছে নেই।
আমজনতার একাংশের আশা, ৩ মে দ্বিতীয় দফার লকডাউন ফুরোলেই তার পরের দিন থেকে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরবে দেশ। তৃতীয় দফার লকডাউনের আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না অনেকে। তবে স্বাস্থ্য-কর্তাদের ইঙ্গিত, আগামিকাল থেকে গোটা দেশে যে আর্থিক কর্মকাণ্ড সচল করতে যে আংশিক ছাড় দেওয়া হয়েছে, লকডাউনের ভবিষ্যৎ নিয়ে উত্তর লুকিয়ে রয়েছে তার মধ্যেই। আংশিক ছাড়ের এই সময়টুকুতে দেশে করোনার সংক্রমণ হঠাৎ উল্লেখজনক ভাবে বাড়ছে কি না, তার উপরেই সব কিছু নির্ভর করছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞেরা।
গত চার সপ্তাহ ধরে ‘তালাবন্দি’ দেশ। স্তব্ধ অর্থনীতি। উপার্জন বন্ধে সব চেয়ে সমস্যায় গরিব শ্রমিক ও গ্রামীণ মানুষেরা। তাই গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে কাল থেকে পারস্পরিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নিয়ম মেনে কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দিচ্ছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। ওই অনুমতি রয়েছে গ্রিন জ়োনে, অর্থাৎ যেখানে কোভিড-১৯ রোগী মেলেনি। হটস্পট বা সংক্রমিত এলাকায় ছাড় দেওয়া হবে না।
আরও পড়ুন: সার্ক দেশে কেন ‘মন্থর’ করোনা? গবেষণার ডাক বিশ্ব ব্যাঙ্কের রিপোর্টে
যদিও তথাকথিত সংক্রমণ-মুক্ত এলাকায় আর্থিক কর্মকাণ্ড শুরু করতে গিয়ে নতুন করে কারও করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না স্বাস্থ্য-কর্তারা। বিশেষ করে লকডাউন চলাকালীন যেখানে গত কয়েক দিনের সংখ্যা ছাপিয়ে আজ বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১৩৩৪ জন করোনায় নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। যার ফলে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬,১১৬। ওই ২৪ ঘণ্টায় মারা গিয়েছেন ২৭ জন। সব মিলিয়ে করোনা এ পর্যন্ত ৫১৯ রোগীর প্রাণ নিয়েছে। এমনকি দিল্লিতে দেড় মাসের একটি শিশু করোনায় মারা গিয়েছে বলে রাজ্যের স্বাস্থ্য-কর্তারা জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: লকডাউন উঠলে কী কী হবে রেল স্টেশনে, চলছে মহড়া
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্মসচিব লব আগরওয়াল মেনে নিয়েছেন, আগামিকাল দিনটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। আসলে শুধু কাল নয়, আগামী দু’সপ্তাহ কেমন যায়, তার উপরে অনেক কিছুই নির্ভর করছে বলে জানাচ্ছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। অনেকেরই আশঙ্কা, আগামী ৭ থেকে ১০ দিন মধ্যে দেশে করোনা-রোগীর সংখ্যা এক ধাক্কায় অনেকটাই বেড়ে যাবে। এক স্বাস্থ্য-কর্তার বিশ্লেষণ, ‘‘আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাঁরা কাজে যাবেন, তাঁদের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েই যায়। যদি তা-ই হয়, সে ক্ষেত্রে তাঁদের উপসর্গ ধরা পড়বে সপ্তাহখানেক পরে, অর্থাৎ এ মাসের একেবারে শেষের দিকে। তাই এপ্রিলের শেষ ও মে মাসের শুরুর দিনগুলিতে দেশে করোনা রোগীর সংখ্যা হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’’ বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি সেই আশঙ্কা ফলে যায়, তা হলে তৃতীয় দফার লকডাউনের জন্য প্রস্তুত থাকবে হবে দেশকে। লব আগরওয়ালের কথায়, ‘‘যে ছাড়ের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে, তার অপব্যবহার না-হওয়াই বাঞ্ছনীয়।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)